নাফ নদীতে ধরা পড়ল আড়াই কেজির ইলিশ
কক্সবাজারের টেকনাফে এক জেলের জালে ধরা পড়েছে প্রায় আড়াই কেজি ওজনের একটি ইলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নাফ নদীতে জাল ফেললে সন্ধ্যায় মাছটি ধরা পড়ে। পরে জেলে ওজন দিয়ে দেখেন, মাছটি ২ কেজি ৪০০ গ্রাম। তাঁর কাছ থেকে মাছটি কিনে নিয়ে টেকনাফ পৌরসভার বাসস্টেশন এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী এর দাম হাঁকাচ্ছেন ৩ হাজার ৬০০ টাকা।
স্থানীয় জেলেরা জানান, করোনা বিধিনিষেধে তাঁরা দুরবস্থায় কাটাচ্ছেন। জীবিকার তাগিদে আজ বিকেলে ছোট একটি নৌকা নিয়ে তাঁদের একজন জেলে ইলিশ ধরার জন্য প্যারাবন–সংলগ্ন নাফ নদীতে জাল ফেলে আসেন। সন্ধ্যার পর জাল তুলে দেখেন, জালে ছোট-বড় চারটি ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে একটি মাছ বিশাল। সেটির ওজন ২ কেজি ৪০০ গ্রাম। বাকি মাছগুলোর ওজন ৩৫০ থেকে ৪০০ গ্রামের মতো। দেরি না করে ভেজা কাপড়েই ওই জেলে চলে আসেন টেকনাফ পৌরসভার বাসস্টেশন এলাকার মাছ বাজারে। সব কটি মাছ ওই জেলের কাছ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় কিনে নিয়েছেন মোজাহার আলম নামে এক মাছ ব্যবসায়ী।
নাফে দীর্ঘ চার বছর ধরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ইলিশগুলো বড় হয়েছে। সাধারণত আড়াই কেজির ইলিশের দেখা সহজে মেলে না।
ব্যবসায়ী মোজাহার আলম বলেন, তিনি আড়াই কেজি ওজনের ইলিশটি প্রতি কেজি দেড় হাজার টাকা দরে দাম হাঁকাচ্ছেন ৩ হাজার ৬০০ টাকা। আর বাকি মাছগুলো ৫০০ টাকা কেজি দাম হলে বিক্রি করবেন।
স্থানীয় আরেক মাছ ব্যবসায়ী কালা মিয়া বলেন, চলতি বছর বাজারে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশগুলো ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে আড়াই কেজির ইলিশ খুব কমই ধরা পড়ে। তাই বিক্রেতা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে বিধিনিষেধের কারণে দাম একটু কমই উঠছে।
বড় আকৃতির ইলিশ মাছটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। এমন বড় ইলিশ মাছ তো আর প্রতিদিন দেখতে পাওয়া যায় না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও ইয়াবার চালান পাচারের অভিযোগে ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের শুরু থেকে নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ করে দেয় বিজিবি। সেই থেকে প্রায় চার বছর ধরে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু জেলে জীবিকার তাগিদে রাতের অন্ধকারে মাছ শিকার করছেন। তবে মিয়ানমারের জেলেরা অবাধে নাফ নদী থেকে মাছ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছেন।
টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এর আগে নাফ নদী থেকে আড়াই কেজির বেশি ওজনের আরেকটি ইলিশ ধরা পড়েছিল। নাফে দীর্ঘ চার বছর ধরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ইলিশগুলো বড় হয়েছে। সাধারণত আড়াই কেজির ইলিশের দেখা সহজে মেলে না।