নারী ওয়ার্ড সদস্য জানালেন অধিকার বঞ্চিত হওয়ার কথা

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দ্বীপপুর ইউপির সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য হাছিনা বানু। আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর বাগমারা প্রেসক্লাব
প্রথম আলো

নারীদের অধিকার নিয়ে বিভিন্ন সভা, কর্মশালা ও উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন রাজশাহীর বাগমারার দ্বীপপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাছিনা বানু। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে জানালেন, তিনি নিজেই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ওয়ার্ড সদস্য হিসেবে তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

দুপুরে উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন হাছিনা বানু। সেখানে তিনি বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড থেকে তাঁকে দূরে রাখা হয়। ইউনিয়ন পরিষদে আসা বিভিন্ন প্রকল্পে সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্যদের সভাপতি বা সদস্য করা হলেও তাঁকে এখন পর্যন্ত কিছুই করা হয়নি। এ ছাড়া সরকারের নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের নির্বাচন করার বা তালিকা তৈরির কার্যক্রমেও যুক্ত করা হয় না।

হাছিনা বানু উপজেলার নানসর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বলেন, ওয়ার্ড সদস্য হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে নারীদের অধিকার নিয়ে কথা বললেও বাস্তবে তিনি নিজেই নিজের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম নিয়ে কথা বলায় তাঁকে নানা কার্যক্রম থেকে দূরে রাখা হচ্ছে।

নিজের কাজের ক্ষেত্র প্রসঙ্গে এই ওয়ার্ড সদস্য বলেন, শুধু মাসিক সম্মানী ভাতা গ্রহণ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের অন্য কার্যক্রমে তাঁকে যুক্ত না করায় কাজের ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কেও এত দিনে তিনি অবগত হতে পারেননি। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে তাঁকে লাঞ্ছিতও হতে হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কয়েক মাস আগে পরিষদে গিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমে চেয়ারম্যানের করা স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদ করলে পরিষদের ভেতরেই তাঁকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। পরে এ নিয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ইউএনও তাঁদের নিজ দপ্তরে ডেকে সমঝোতা করে দিয়েছিলেন। এরপরও বিভিন্ন সময় চেয়ারম্যানের অবজ্ঞা শিকার হতে হয়েছে তাঁকে।

হাছিনা বানু বলেন, প্রকৃত দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা নারীদের বাদ দিয়ে বিবাহিত নন—এমন নারীর নাম মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন চেয়ারম্যান। এ নিয়ে ৪ মার্চ ইউএনওর কাছে তিনি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ইউপির চেয়ারম্যান মকছেলুর রহমান বলেন, হাছিনা বানুর অভিযোগ বানোয়াট। তাঁকে বিভিন্ন সভায় ডাকা হয়, তবে তিনি আসেন না।

উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা খন্দকার মাক্বামাম মাহমুদা বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতার অনিয়ম নিয়ে একটি অভিযোগ তিনিও পেয়েছেন। প্রাথমিকভাবে এর সত্যতাও পাওয়া গেছে। হাছিনা বানুর তোলা অন্যান্য অভিযোগেরও তদন্ত করা হবে।