নারী কর্মকর্তাকে হয়রানি: অভয়নগরের পিআইও প্রত্যাহার

নারী কর্মকর্তাকে হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর যশোরের অভয়নগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শরীফ মোহাম্মদ রুবেলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁকে অভয়নগর উপজেলা থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
গতকাল রোববার বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রশাসন-১–এর উপপরিচালক লুৎফুন নাহার (উপসচিব) স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) বিরুদ্ধে হয়রানি এবং জীবননাশের হুমকির অভিযোগ এনে গত মঙ্গলবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন উপজেলা প্রশাসনের এক নারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর ওই নারী কর্মকর্তাকে গত বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় বদলি করে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই দুই কর্মকর্তা।

এ ঘটনায় ইউএনও নাজমুল হুসেইন খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শাম্মী ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান।

গতকাল রোববার প্রথম আলোয় ‘ইউএনও-পিআইওর বিরুদ্ধে নারী কর্মকর্তাকে হয়রানির অভিযোগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ওই দিন বিকেলেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রশাসন-১–এর উপপরিচালক লুৎফুন নাহার (উপসচিব) স্বাক্ষরিত চিঠিতে পিআইওকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, অভয়নগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শরীফ মোহাম্মদ রুবেলকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহারপূর্বক অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হলো। বদলি কর্মকর্তা রোববার বিকেল পাঁচটার মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হবেন এবং সোমবার বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় আজ সোমবার অপরাহ্ণে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক কর্মবিমুক্ত বলে গণ্য হবেন। রোববার বিকেলে তিনি অভয়নগর উপজেলা থেকে অবমুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলী হায়দার।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদনে ওই নারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, গত ৪ মার্চ তিনি অভয়নগর উপজেলায় যোগদান করেন। কিন্তু শুরু থেকে ইউএনও নাজমুল হুসেইন খান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। তাঁকেসহ অন্য সহকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। এ ছাড়া কার্যালয়ের নির্ধারিত সময়ের পর গভীর রাত পর্যন্ত তাঁকে কার্যালয়ে থাকতে বাধ্য করতেন। একপর্যায়ে তিনি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শরিফ মোহাম্মদ রুবেলের মাধ্যমে তাঁকে কুপ্রস্তাব দেন। তাঁদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সর্বশেষ তিনি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

বক্তব্য জানতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শরীফ মোহাম্মদ রুবেলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি।