নারীর গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য নির্ধারণ ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি
নারীর গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য নির্ধারণ এবং এ কাজের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বগুড়া জেলা শাখার আয়োজনে রোববার দুপুর ১২টার দিকে শহরের সাতমাথায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অসহায় নারীদের বয়স্ক ও দুস্থ ভাতা নয়; বরং সামাজিকভাবে তাঁদের পুনর্বাসন করতে হবে। গ্রাম ও শহরে সরকারিভাবে ডে কেয়ার সেন্টার নির্মাণ ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মজীবী নারীদের জন্য সরকারি হোস্টেল নির্মাণে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। নারীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়াও দুস্থ নারীদের পুনর্বাসন এবং নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি দিলরুবা নূরী সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বগুড়া জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বজেলা শাখার প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক আকলিমা বেগম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক নিয়তি সরকার নিতু, সদস্য পূজা প্রামাণিক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বাসদ জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি নেই। এতে করে পরিবারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের মতামত প্রাধান্য পায় না। স্বামী বা পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এককভাবে সিদ্ধান্ত নেন।
পরিবারে নারীর শারীরিক-মানসিক শ্রম থাকার পরও তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদের পর সম্পত্তির ভাগ পান না উল্লেখ করে সাইফুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক সম্পত্তি অর্জনে নারীরও ভূমিকা রয়েছে। গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য নিরূপণ ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করা হলে নারীর প্রতি সহিংসতা কমবে, নারীর ক্ষমতায়ন বাড়বে এবং নারীর প্রতি পরিবারের ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটবে।
বক্তারা বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য নিরূপণ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতির বিষয়টি উপেক্ষিতই থেকে গেল। জেন্ডার বাজেটে বরাদ্দ ১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এত অল্প বাজেটে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বাজেট পাসের আগেই নারীর কাজের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ডে কেয়ার সেন্টার, কর্মজীবী হোস্টেল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে।