নিখোঁজের চার দিন পর কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার

কলেজছাত্র সুজন হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নিখোঁজ হওয়ার চার দিন পর এক কলেজছাত্রের লাশ মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার আউশিয়া গ্রামের সেচযন্ত্র রাখার একটি ঘরের মেঝে খুঁড়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওই কলেজছাত্রের নাম সুজন হোসেন (২০)। তিনি  শৈলকুপা উপজেলার আউশিয়া গ্রামের মালয়েশিয়াপ্রবাসী জিল্লুর রহমানের ছেলে। তিনি ঝিনাইদহ সিটি কলেজের ছাত্র ছিলেন। পুলিশ বলছে, টাকার জন্য সুজন হোসেনকে তাঁর বন্ধুরা কুপিয়ে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা দিয়ে রেখেছিলেন।

২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে বাড়ি থেকে সার কেনার জন্য শৈলকুপা বাজারে যান সুজন হোসেন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। প্রথমে তাঁরা নানা স্থানে তাঁকে খোঁজাখুঁজি করেন।

সুজনের পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে বাড়ি থেকে সার কেনার জন্য শৈলকুপা বাজারে যান সুজন হোসেন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। প্রথমে তাঁরা নানা স্থানে তাঁকে খোঁজাখুঁজি করেন। একসময় পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন শহরের হল মার্কেট এলাকা থেকে এক যুবক সুজনকে মোটরসাইকেলে কৌশলে তুলে নিয়ে গেছেন। এই খবর পেয়ে তাঁদের সন্দেহ হয়। সুজন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তাঁর চাচা রবিউল ইসলাম শৈলকুপা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলাম জানান, সুজনের পরিবার স্থানীয় কয়েকজনকে সুজন নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ করেন। এরপর তাঁরা দেখতে পান যাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন। পরে তাঁরা বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ মঙ্গলবার সুজন নিখোঁজ থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আউশিয়া গ্রামের সাকিব হোসেন, নাজমুল আলম ও  হৃদয়কে আটক করে। ওই তিনজন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, সুজনকে হত্যার জন্য তাঁরা আগেই পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সুজনকে হত্যার দুই দিন আগেই সাকিবদের সেচযন্ত্র রাখার ঘরের মেঝে খুঁড়ে রাখা হয়েছিল। ২০ সেপ্টেম্বর শহরের হল বাজার এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে তাঁরা তাঁকে কৌশলে তুলে নিয়ে আসেন। ওই দিন রাতে তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘাড়ে কোপ দিয়ে তাঁকে হত্যার পর লাশ মাটিতে পুঁতে রাখেন।

শৈলকুপা থানার এসআই আমিরুল ইসলাম আরও জানান, সুজন হোসেনের বাবা জিল্লুর রহমান দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মালয়েশিয়া আছেন। তিনি যে টাকা পাঠাতেন তা ছেলের কাছেই থাকত। সুজন বন্ধুদের দিয়ে ওই টাকা নানা ব্যবসায় বিনিয়োগ করতেন। এ ছাড়া সুজন সম্প্রতি চাকরির জন্য এক ব্যক্তিকে ২ লাখ টাকা দেন। ওই চাকরির জন্য আরও ৫ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেই টাকাও তিনি জোগাড় করে রেখেছিলেন। ওই টাকা নেওয়ার জন্য সুজনের বন্ধুরা তাঁকে হত্যা করেন।

এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, সুজনের বন্ধুরা তাঁকে টাকার জন্যই হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে সুজনের লাশ উদ্ধার করার পর থানায় নিয়ে আসা হয়। আজ শুক্রবার সকালে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।