নিজের পরিচয়পত্রে অন্যের স্বাক্ষর, এক যুগ ধরে ভুগছেন মুনিরা

জাতীয় পরিচয়পত্র
প্রতীকী ছবি

২০০৯ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নিবন্ধন করেছিলেন মুনিরা রহমান মিমি। পরিচয়পত্র হাতে পেয়ে দেখতে পেলেন তাঁর স্বাক্ষরের জায়গায় অন্য এক নারীর স্বাক্ষর। আবার জন্মসালেও মিল নেই। এরপর এক যুগ কেটে গেছে। দুই দফা নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন, কিন্তু মুনিরার জাতীয় পরিচয়পত্র আর সংশোধন করা হয়নি। ফলে সরকারের নানা সেবা গ্রহণ করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন তিনি।

মুনিরা রহমান শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পালং এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় রাজগঞ্জ ইসলামিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তিনি মৃত আবদুল হাদির স্ত্রী ও রহমান কোতোয়ালের মেয়ে।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে মুনিরা রহমান জাতীয় পরিচয়পত্রের নিবন্ধন করেন। সেখানে তাঁর নাম ও পরিচয় সঠিক ওঠানো হয়। কিন্তু স্বাক্ষরের স্থানে গীতা রানী শীল নামের এক নারীর স্বাক্ষর ওঠানো হয়েছে। আর ওই শিক্ষকের জন্মসাল হচ্ছে ১৯৮৪, কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে তাঁর জন্মসাল দেখাচ্ছে ১৯৭৯। পরিচয়পত্রের এ ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করা হলেও তা সংশোধন করা হয়নি। নির্বাচন কার্যালয় থেকে ২০১৯ সালে স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হয়। সেখানেও ওই ভুলগুলো থাকায় মুনিরা রহমান বিড়ম্বনায় পড়ছেন। যেসব সেবা পেতে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য মেলানো হয়, সেসব সেবা পাচ্ছেন না মুনিরা রহমান।

মুনিরা রহমান বলেন, ‘আমি স্নাতক পাস করেছি। সরকারি চাকরির জন্য বিভিন্ন দপ্তরে অনেক আবেদন করেছিলাম। জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় কোনো দপ্তর থেকে সারা পাইনি। এখন সরকারি চাকরির বয়সও নেই। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছি। সেখানেও এমপিওভুক্তি করাতে পারছি না।’

মুনিরা জানান, ২০১২ সালে তাঁর স্বামীর মৃত্য হয়েছে। এরপর তাঁর সহায়-সম্পদ, ব্যাংকের হিসাব পরিচালনায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এমন অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দুই দফা জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আবেদন করেছেন তিনি। তারা কোনো পথ দেখাতে পারেনি।

জানতে চাইলে শরীয়তপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটা এন্টি করা হয় সার্ভারে। ওই কাজ করার সময় হয়তো অসাবধানতাবসত এমন হয়েছে। পরিচয়পত্রের স্বাক্ষর দেওয়ার স্থানে অন্য আরেকজনের স্বাক্ষর বসানো হয়েছে, তা প্রিন্টের আগে খেয়াল করা উচিত ছিল। ১২ বছরেও কেন ভুলটি সংশোধন করা হয়নি, তা বলতে পারবেন না তিনি। ওই নারী নতুন করে আবেদন করলে বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনু বিভাগে কথা বলবেন তিনি।