নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ, দাফনের ১৭ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন

সাদুল্যাপুরে প্রভাবশালীদের নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে অভিযোগে এক রিকশাচালককে লাশ দাফনের ১৭ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে
প্রতীকী ছবি

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে ছকু মিয়া (৫০) নামের এক রিকশাচালককে লাশ দাফনের ১৭ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ওই রিকশাচালক প্রভাবশালীদের নির্যাতনে মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার বিকেলে উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পূর্ব দামোদরপুর গ্রাম থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. লোকমান হোসেনসহ সাদুল্যাপুরে থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদ রানা বলেন, আদালতের নির্দেশে ১৮ জুন থানায় এই হত্যা মামলা করা হয়েছে এবং সোমবার বিকেলে ছকু মিয়ার লাশ উত্তোলন করা হয়। সোমবার বিকেলেই লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে ১৬ জুন নিহত ছকু মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল হক গাইবান্ধার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শবনম মুস্তারীর আমলি আদালতে একটি পিটিশন মামলা করেন। আদালতের বিচারক ২৩ জুনের মধ্যে সাদুল্যাপুর থানাকে মামলা রেকর্ডভুক্ত করে মরদেহ উত্তোলনসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

আদালত ২৩ জুনের মধ্যে সাদুল্যাপুর থানাকে মামলা রেকর্ডভুক্ত করে মরদেহ উত্তোলনসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলার পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের ছয় ভাই আলমগীর, আঙুর, রঞ্জু, মঞ্জু, সঞ্জু ও মন্টু মিয়ার সঙ্গে পারিবারিক ও দাদনের টাকা নিয়ে রিকশাচালক ছকু মিয়ার বিরোধ চলে আসছিল। এ ছাড়া সম্প্রতি ছকু মিয়ার ছেলের সঙ্গে মন্টু মিয়ার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে পুনরায় তাঁদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জেরে ওই ছয় ভাই গত ১৫ মে রাতভর ছকু মিয়াকে নির্যাতন করেন। পরের দিন বিষয়টি ৯৯৯-এ জানালে পুলিশ ছকু মিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছকুর ধারণকৃত বয়ান ‘ডাইং ডিক্লারেশন’ হিসেবে আদালত জব্দ করেছেন।

মামলার বাদী ছকু মিয়ার ছেলে পোশাককর্মী মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কয়েক দিন চিকিৎসার পর বাবাকে বাড়ি নিয়ে যান। এরপর ৩ জুন দুপুরে তাঁর বাবা মারা যান। পরদিন ৪ জুন লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ থানায় মামলা গ্রহণ না করায় আদালতে মামলা করা হয়।

জানতে চাইলে মামলার আসামি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ছকু মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল আমার অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া ভাতিজিকে গত ১৫ মে অপহরণ করে নিয়ে যান। এ বিষয়টি ছকু মিয়ার ভাইদের অবহিত করা হলে তাঁরা ছকু মিয়াকে শাসন করেন। আমরা তাঁকে কোনো মারধর করিনি। এরপর স্থানীয়ভাবে এক সালিস বৈঠকের পর ছকু মিয়ার বড় ভাই মেয়েটিকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন।’