নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে চিকিৎসাধীন গৃহকর্মী সাদিয়ার মৃত্যু

সাদিয়া পারভীন

ছোট্ট শরীরে নির্যাতনের অসংখ্য ক্ষত নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু গৃহকর্মী সাদিয়া পারভীনের (১০) মৃত্যু হয়েছে। সাদিয়া শেরপুরের শ্রীবরদী পৌর শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার ট্রলিচালক সাইফুল ইসলামের মেয়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।

শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় সাদিয়া মারা যায়। হাসপাতালে অবস্থানরত সাদিয়ার বাবা সাইফুল ইসলাম শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রথম আলোর কাছে তাঁর মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেন। তিনি এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী রুমানা জামানকে দায়ী করে তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

মামলার এজাহার ও সাদিয়ার বাবার বক্তব্য সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব ও তাঁর স্ত্রী রুমানা জামান সাদিয়াকে গৃহকর্মী হিসেবে তাঁদের বাসায় নিয়ে যান। পরে গৃহকর্ত্রী রুমানা জামান প্রায় সময় সাদিয়ার কাজকর্মে ভুলভ্রান্তির জন্য শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের কারণে সাদিয়ার মাথা, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দগদগে ঘা ও ক্ষত হয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে আহসান হাবিবের বাসা থেকে সাদিয়াকে উদ্ধার করা হয়।

পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৭ সেপ্টেম্বর তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে প্রায় এক মাস ওই হাসপাতালে সাদিয়া চিকিৎসাধীন ছিল। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে শুক্রবার বিকেলে সাদিয়া না–ফেরার দেশে চলে যায়।

এদিকে সাদিয়াকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গৃহকর্ত্রী রুমানা জামানকে আসামি করে গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে শ্রীবরদী থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ রুমানা জামানকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি জেলা কারাগারে রয়েছেন।

জানতে চাইলে শেরপুরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, নির্যাতনের শিকার শিশু সাদিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন