নির্যাতনের মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলাতে আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর নির্যাতনে আহত শিশু গৃহকর্মী সাদিয়া পারভীনের (১০) মৃত্যুর ঘটনাটি হত্যা মামলা হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে। শ্রীবরদীর আমলি আদালতের বিচারক মহসিনা হোসেন আজ মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগের দায়ের করা মামলার নথিতে এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে নথিভুক্ত করেন।

শ্রীবরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম এ আবেদন করেন। আদালত পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার শহীদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিবের স্ত্রী রুমানা জামানের শারীরিক নির্যাতনের ফলে গুরুতর আহত সাদিয়া পারভীন প্রায় এক মাস ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত শুক্রবার মারা যায়। সাদিয়া শ্রীবরদী পৌর শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার ট্রলিচালক সাইফুল ইসলামের মেয়ে। সাদিয়াকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় তাঁর বাবা সাইফুল বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রুমানা জামানকে আসামি করে গত ২৬ সেপ্টেম্বর শ্রীবরদী থানায় মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার রুমানা বর্তমানে জেলহাজতে আটক রয়েছেন।

সাইফুল বলেন, প্রায় এক বছর আগে শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব ও তাঁর স্ত্রী রুমানা জামান সাদিয়াকে গৃহকর্মী হিসেবে তাঁদের বাসায় নিয়ে যান। রুমানা প্রায় সময় কাজকর্মে ভুলভ্রান্তির জন্য সাদিয়াকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন।

সাদিয়া পারভীন (১০)।
প্রথম আলো

এদিকে নির্যাতনের ফলে গৃহকর্মী সাদিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি রাজিয়া সামাদ, জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি জয়শ্রী দাস লক্ষ্মী, নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মানবাধিকার সংগঠন আমাদের আইনের সভাপতি নুর ই আলম পৃথক বিবৃতি পাঠিয়েছেন।

বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা আহসান হাবিব নিজ বাসায় শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। তাঁর অজান্তে দিনের পর দিন এমন ঘটনা ঘটেছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাই তাঁকেও (আহসান হাবিব) আইনের আওতায় এনে ওই দম্পতির ফাঁসির দাবি করেন নেতৃবৃন্দ।

এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের ফলে শিশু সাদিয়ার মৃত্যুর মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। মামলার একমাত্র আসামি রুমানা জামানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তদন্তে এ ঘটনায় রুমানার স্বামী আহসান হাবিবের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাঁকেও আইনের আওতায় আনা হবে।