নিষিদ্ধ হলেও সিলেটের মহাসড়কে অবাধে চলছে অটোরিকশা

অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ সদস্যদের মাসোয়ারা দিয়ে নম্বরবিহীন অটোরিকশা নামছে মহাসড়কে।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার চণ্ডীপুলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষে সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড বসানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে
প্রথম আলো

মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ। এরপরও সিলেটের মহাসড়কে অবাধে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে অটোরিকশা দিয়ে। মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্ট্যান্ডও।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচল করায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সর্বশেষ দুর্ঘটনা ঘটেছে গত ১৩ আগস্ট। ওসমানীনগরের বেগমপুর এলাকায় ওই দুর্ঘটনায় সিলেটগামী বাসের সঙ্গে মৌলভীবাজারগামী সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে শিশুসহ পাঁচ যাত্রী ও চালকের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে সব মহাসড়কে অটোরিকশা, টেম্পোসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করে সরকার। তবে বাস্তবের চিত্র ভিন্ন। সিলেটে মানা হচ্ছে না এ নিয়ম।

সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার কিনব্রিজের সামনে, কদমতলী মোড়, ভার্থখলা এলাকার ভূঁইয়ার পাম্প, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হুমায়ুন রশিদ চত্বর, মহাসড়কের চণ্ডীপুল মোড়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লাইন ধরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা রেখে তা স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক দিয়ে সিলেটের বিশ্বনাথ, লালাবাজার, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ, তাজপুর, গোয়ালাবাজার, নাজিরবাজার, জগন্নাথপুর, নবীগঞ্জ, গহরপুরে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার চণ্ডীপুলে সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড বসানো হয়েছে। স্ট্যান্ডে যাত্রী পরিবহনের জন্য দেখা গেছে নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা। নম্বরবিহীন অটোরিকশার দুজন চালক বলেন, নম্বর না থাকলেও পুলিশ টোকেনের মাধ্যমে মাসিক ৫০০ টাকা দিয়ে যাত্রী পরিবহনের অনুমতি পেয়েছেন তাঁরা। নম্বরবিহীন অটোরিকশাগুলোর মধ্যে সবাই একইভাবে যাত্রী পরিবহন করছে।

অটোরিকশার যাত্রী জাবের আহমদ বলেন, প্রায়ই অটোরিকশায় করে ওসমানীনগর, নাজিরবাজার যাতায়াত করেন তিনি। বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এ জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশাতে যাতায়াত করেন। এতে কিছুটা হলেও সময় বাঁচে। তবে মহাসড়ক দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাতায়াতে দুর্ঘটনার শঙ্কা তো রয়েছেই।

জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জাকারিয়ার সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এরশাদুল হক ভূঁইয়া বলেন, হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে শক্ত অবস্থানে আছে। নিয়মিত মহাসড়কে অভিযান পরিচালনা করা হয়। লেনদেনের বিষয়টি সত্য নয়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও গণমাধ্যম) মো. লুৎফর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ফাঁকি দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। তবে কোনো ধরনের লেনদেন কিংবা টোকেনের ব্যাপারে জেলা পুলিশ জড়িত নয়।

সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, টোকেনের মাধ্যমে নম্বরবিহীন অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। অবৈধ যেকোনো যানবাহন পেলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।