নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে এনায়েতপুর হাটে মানুষের ভিড়

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর হাটে শুক্রবার কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে দিনব্যাপী বৃষ্টি উপক্ষো করে অসংখ্য মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে
প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর হাটে কঠোর লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে হাজার হাজার মানুষের জনসমাগম হয়েছে। আজ শুক্রবার দিনব্যাপী জেলার এই বৃহৎ হাটে বৃষ্টি উপেক্ষা করে অসংখ্য মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে। অধিকাংশ মানুষের মুখে ছিল না মাস্ক। ছিল মানুষের অবাধ বিচরণ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার সীমানায় অবস্থিত এনায়েতপুরে কাপড়ের হাট প্রতি সপ্তাহে চার দিন বসে। আর সপ্তাহের মূল হাট বসে শুক্রবার। মূল হাটবারে খাদ্যপণ্য, পোশাক, সুতাসহ যাবতীয় পণ্যের হাজারো ভাসমান দোকান বসে এই হাটে। লকডাউনের দ্বিতীয় দিন আজ শুক্রবার ঠিক একইভাবে বিধিনিষেধ অমান্য করে মাইকে বিশাল এই হাট বসানোর ঘোষণা দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি গরু-ছাগল, সুতা, পোশাকসহ বিধিনিষেধের আওতায় থাকা সব ধরনের দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন দোকানিরা।

আজ দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, গরু–ছাগলের বিশাল হাটটিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে সহস্রাধিক গরু-ছাগল উঠেছে। সেখানে গাদাগাদি করেই ক্রেতা-বিক্রেতারা কেনাবেচা করছিলেন। অধিকাংশ মানুষের মুখে ছিল না মাস্ক। একই সঙ্গে প্রচণ্ড ভিড় ছিল তরিতরকারির পট্টি, মাছ-মাংস, চাল, ডাল, পোশাক, সুতা ও অন্যান্য পণ্যের পট্টিতে। দিনভর ছিল হাটে আসা ভ্যান, ট্রাক, টেম্পো ও নছিমনের যানজট। কেউ লকডাউন মানেননি।

হাটটিতে ছাগল কিনতে এসেছিলেন চৌহালী স্থল চরের ইদ্রিস আলী। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম করোনার লকডাউনে হাট বসবে না। বৃহস্পতিবার আগেই গরুর ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে, থানাকে ম্যানেজ করে হাট বসানো হবে। তাই মুখে মুখে শুনে হাটে এসেছি। দেখলাম আসলেই কোনো সমস্যা নেই। পুলিশও কিছু বলেনি। আমাদের মতো আরও হাজার হাজার মানুষ এসেছে। তবে হাটে বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতা কম।’

হাটটিতে ছাগল কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আগেই গরুর ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে, থানাকে ম্যানেজ করে হাট বসানো হবে। তাই মুখে মুখে শুনে হাটে এসেছি।’

সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আসা মানুষের দলে ছিলেন এনায়েতপুর গ্রামের সোহরাব আলী। তিনি বলেন, ‘হাট বসবে না ভেবে বাড়িতে ছিলাম। প্রচুর বৃষ্টিও ছিল। বেলা ১১টার দিকে বৃষ্টি কমলে হাটে গিয়ে দেখি ব্যাপক সমাগম। সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১৫ হাজারের মতো মানুষ হাটে এসেছে। তাই হাটে এসে বাজার-সদাই করেছি। তবে ভয় লেগেছে একটাই, আমাদের মুখে মাস্ক থাকলেও হাটে আসা ৯০ ভাগ মানুষের মুখে কোনো মাস্ক ছিল না।’

জানতে চাইলে এনায়েতপুর হাটের ইজারাদার ফজলু ব্যাপারী বলেন, ‘সরকার লকডাউন ঘোষণা দিয়েছে, সে বিষয় যমুনা চরের অনেক মানুষ জানে না। যে কারণে না জেনে অনেকেই হাটে এসেছে। আমি তো তাদের নিষেধ করতে পারি না।’ জানতে চাইলে এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, হাটে তেমন সমাগম নেই। চরের মানুষ না জেনে গরু নিয়ে আসতে পারেন। এ ছাড়া অন্য সব বন্ধই রয়েছে।

সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফারুক আহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কঠোর বিধিনিষেধ মানতে সবাইকে সচেতন করতে আমাদের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। তবে কেন এমন ব্যত্যয় হলো, সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’