নীলফামারীতে তিস্তার স্পার বাঁধ ভেঙে সহস্রাধিক পরিবার বন্যাকবলিত

গতকাল মধ্যরাতে স্পার বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়িতে তিস্তা নদীর স্পার বাঁধ ভেঙে সহস্রাধিক পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে আবাদি জমি। বাঁধটি ভাঙার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভেন্ডাবাড়িতে তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে অবস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ২ নম্বর স্পার বাঁধটিতে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিলে গতকাল রোববার সকালে সেখানে বালুর বস্তা ফেলা শুরু করে পাউবো। কিন্তু গতকাল মধ্যরাতে বাঁধটির প্রায় ২০০ ফুট ভেঙে গেছে। এতে ইউনিয়নের ভবনচুর, দক্ষিণ সোনাখুলি, ভেন্ডাবাড়ি ও কুটিপাড়া গুচ্ছগ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে এসব এলাকার প্রায় ১০০ পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে।

স্পার বাঁধে আশ্রয় নেওয়া শামসুল ইসলাম (৫০) বলেন, ‘তিস্তা নদী আমার সব শেষ করছে। প্রায় তিন বছর ধরে এই বাঁধে ঘর তুলে কোনোরকমে দিন কাটাচ্ছিলাম। এই বাঁধও ভেঙে গেল। এখন আমরা যাব কোথায়?’

ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, গতকাল দিবাগত মধ্যরাতে স্পার বাঁধটি ভেঙে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে। এতে প্রায় এক হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়েছে। কুটিপাড়ায় অবস্থিত গুচ্ছগ্রামেও নদীর পানি প্রবেশ করেছে। গুচ্ছগ্রামটি যেকোনো মুহূর্তে তিস্তাগর্ভে বিলীন হতে পারে। গুচ্ছগ্রামের পরিবারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা জানান, তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে ২ নম্বর স্পার বাঁধের প্রায় ২০০ ফুট ভেঙে গেছে। বালুর বস্তা ফেলে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু নদীর পানি ওঠানামা করার কারণে ভাঙন বাড়ছে।

পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার দুপুর ১২টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। আজ সকাল ৬টায় ৫২ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ৫২ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার এবং দুপুর ১২টায় ৫২ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।