নীলফামারীতে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বিজিবি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা

প্রতীকী ছবি

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর রুবেল হোসেন নামের এক বিজিবি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম দলিরাম মাঝাপাড়া ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হয়। ওই ফল প্রত্যাখ্যান করেন লাঙল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়ানো চেয়ারম্যান প্রার্থী মারুফ হোসেনের সমর্থকেরা। কেন্দ্র থেকে ব্যালটসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম উপজেলা সদরে রিটার্নিং অফিসারের দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার সময় হামলা চালান তাঁরা। আত্মরক্ষা করতে বিজিবি সদস্য রুবেল কেন্দ্রের একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। এ সময় তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেন মারুফ হোসেনের সমর্থকেরা। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্র ও ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। পরিস্থিতি সামলাতে গুলি ছোড়েন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ নিহত রুবেলের মরদেহ উদ্ধার করে।

পশ্চিম দলিরাম মাঝাপাড়া ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ললিত চন্দ্র রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ফলাফল ঘোষণার পর লাঙল প্রতীকের প্রার্থী মারুফ হোসেন লোকজন নিয়ে এসে তাঁকে বিজয়ী ঘোষণার দাবি জানান। দাবি মেনে না নেওয়ায় তাঁরা নির্বাচনী সরঞ্জাম নিতে বাধা দেন। এ সময় তাঁরা আক্রমণ চালালে আমিসহ একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং কয়েকজন পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্য আহত হন।’

রোববার রাত ১১টার দিকে নীলফামারী স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক আব্দুর রহমান বলেন, ‘হামলায় বিজিবির নায়েক রুবেল হোসেন নিহত হয়েছেন। এ সময় হামলাকারীরা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। কর্তব্যরত একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে রোববার নীলফামারীসহ নির্বাচনী সহিংসতা ও সংঘর্ষে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় দুজন, নরসিংদীর রায়পুরায় দুজন এবং লক্ষ্মীপুর ও খুলনায় একজন করে মোট সাতজন নিহত হয়েছেন। আর সংঘর্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছেন। কুমিল্লায় এক প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিশের এক এসআই ছুরিকাঘাতে জখম হয়েছেন।

ওই সাতজনসহ তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাতে ১৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটল। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ৩০ জন এবং প্রথম ধাপে ৫ জন নিহত হয়েছিলেন। এ নিয়ে তিন ধাপের ভোটে মোট ৫১ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।

রোববার সারা দেশে ১ হাজার ৪টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবশ্য এবার অনেক জায়গায় উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটারদের ভোট দিতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও ভোটারদের দীর্ঘ সারি ছিল চোখে পড়ার মতো।