নীলফামারীতে বিজিবি সদস্য নিহতের ঘটনায় প্রার্থীসহ ৯৫ জনের নামে মামলা

নীলফামারী জেলার মানচিত্র

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতায় বিজিবি সদস্য নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মারুফ হোসেনসহ ৯৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন ওই ইউনিয়নের পশ্চিম দলিরাম মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ললিত চন্দ্র রায়। গত রোববারের ওই ঘটনায় সোমবার আটক আটজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, গত রোববার অনুষ্ঠিত গাড়াগ্রাম ইউপি নির্বাচনে পশ্চিম দলিরাম মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ব্যালটসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসার সময় পরাজিত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মারুফ হোসেন ওরফে অন্তিকের নেতৃত্বে আসামিরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এতে কর্তব্যরত বিজিবির ল্যান্স নায়েক রুবেল হোসেন মণ্ডল (৩৫) মুখমণ্ডলে আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন। ওই ঘটনায় কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ একাধিক পুলিশ ও বিজিবি কর্মকর্তা এবং সদস্য আহত হয়েছেন। আত্মরক্ষা ও সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ১৮৫টি গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেন।

ওই সহিংসতার ঘটনায় একজন বিজিবি সদস্যের প্রাণহানিসহ নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত মোটরযান, একটি মোটরসাইকেল ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির দরজা-জানালা ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় নির্বাচনে দায়িত্বরত ব্যক্তিদের সম্মানী ভাতা ৫৬ হাজার ৬৫০ টাকা চুরি হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল আউয়াল। তিনি বলেন, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আটজনকে মঙ্গলবার সকালে আদালতের মাধ্যমে নীলফামারী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনাটি তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটির তদন্তকাজ চলমান আছে। তদন্তকাজের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুরে নীলফামারী সার্কিট হাউসে নির্বাচনী কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তবে তদন্তের স্বার্থে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি কমিটির সদস্যরা।

আরও পড়ুন