নৃশংস হামলা, জীবন সংকটাপন্ন

বাঁ চোখটা উপড়ে ফেলা হয়েছে। ধারালো অস্ত্রের কোপে ডান পা প্রায় বিচ্ছিন্ন। দুই ভাগ হয়ে গেছে চোয়ালের ডান অংশ। শুক্রবার দুপুরে এমন নৃশংস হামলার শিকার হয়েছেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার এক ব্যক্তি।

হামলার শিকার ব্যক্তির নাম মো. মিন্টু মৃধা (৪২)। তিনি বাউফল সদর ইউনিয়নের গোসিংগা গ্রামের আবদুল করিম মৃধার ছেলে। হামলার ঘটনা ঘটে একই উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের দ্বিপাশা উঁচু পুল খেয়াঘাট এলাকায়। তাঁকে সংকটাপন্ন অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মিন্টু মৃধার সঙ্গে ২০১৬ সাল থেকে বিরোধ চলে আসছে মিজানুর ও তাঁর ভাই সোহেলের। ওই সময়ে সোহেলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তখন থেকে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা চলমান। মিন্টু কারাভোগের পর সম্প্রতি ছাড়া পান।

আহত মিন্টুর মেয়ে সোনিয়া আক্তার বলেন, দ্বিপাশা গ্রামের মিজানুর রহমান মাতুব্বর (৪০) ও তাঁর ভাই সোহেল মাতুব্বরের (৩৫) নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। তাঁর বাবা মিন্টু বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছেন। মিন্টুর সঙ্গে ওই দুজনের পূর্ববিরোধ রয়েছে।

পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মিন্টু মৃধা পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। তাঁর সঙ্গে ২০১৬ সাল থেকে বিরোধ চলে আসছে দ্বিপাশা গ্রামের মিজানুর ও তাঁর ভাই সোহেলের। ওই সময়ে প্রতিপক্ষ সোহেলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তখন থেকে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা চলমান। মিন্টু একটি মামলায় কারাভোগের পর সম্প্রতি ছাড়া পান। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি দ্বিপাশা উঁচু পুল খেয়াঘাট এলাকার একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর ওপর হামলা হয়। হামলাকারীরা নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করে মিন্টুকে। খুঁচিয়ে তাঁর ডান চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। কুপিয়ে ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে হামলাকারীরা। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মুখের বাঁ দিকের চোয়াল দুই ভাগ হয়ে গেছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপের চিহ্ন রয়েছে।

মিন্টু মৃধার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ক্ষতস্থানগুলো থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে বরিশালে পাঠানো হয়।
তানভীর আহমেদ, চিকিৎসা কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বাউফল

এ ঘটনার পর থেকে মিজানুর ও সোহেল এলাকায় নেই। তবে হামলায় ওই দুজনের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁদের এক স্বজন। তিনি বলেন, সোহেল ঢাকায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরি করেন। তিনি বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। হামলার ঘটনায় মিজানুরও জড়িত নন। মূলত মাদক কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করলেই আসল বিষয় বেরিয়ে আসবে।
হামলার পর গুরুতর আহত অবস্থায় মিন্টু মৃধাকে প্রথমে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এলাকাবাসী। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মিন্টুকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. তানভীর আহমেদ বলেন, মিন্টু মৃধার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ক্ষতস্থানগুলো থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে বরিশালে পাঠানো হয়।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পূর্ববিরোধের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তাঁরা আশা করছেন, দ্রুতই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন।