নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও নির্যাতন হচ্ছে, অভিযোগ বিএনপির প্রার্থীর

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নওগাঁ-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী শেখ রেজাউল ইসলাম। সোমবার দুপুরে নওগাঁ শহরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে
প্রথম আলো

নওগাঁ-৬ (রানীনগর ও আত্রাই) আসনে উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী শেখ রেজাউল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা না চালাতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নওগাঁ শহরের কেডির মোড়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন বিএনপির এই প্রার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শেখ রেজাউল ইসলাম বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে আত্রাই ও রানীনগর উপজেলায় বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের এক বীভৎস চিত্র ফুটে উঠেছে। ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রানীনগর উপজেলা বিএনপির বর্ধিত সভায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে লাঠিমিছিল নিয়ে এসে হামলা চালান আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা। ওই হামলার ঘটনায় বিএনপির ১০-১২ জন নেতা-কর্মী আহত হন। ২৮ সেপ্টেম্বর রানীনগর উপজেলার ভবানীপুর-মির্জাপুর বাজারে নির্বাচনী প্রচারের কাজ চালানোর সময় প্রতিপক্ষের লোকজন হামলায় চালিয়ে বিএনপির প্রার্থীর আটজন কর্মী-সমর্থককে আহত করেন। সবশেষ রোববার রানীনগর উপজেলার আবাদপুকর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারকাজ চালানোর সময় বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির সাত নেতা-কর্মী আহত হন।

বিএনপির প্রার্থী হেরে যাবেন জেনেই এসব অভিযোগ করছেন। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই উল্লেখ করে শেখ রেজাউল ইসলাম বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ৪৫টি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনাতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী হেরে যাবেন জেনেই এসব অভিযোগ করছেন। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। এই পরিবেশ নষ্ট করতে বিএনপির প্রার্থী মিথ্যাচার করছেন। তাঁর নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও হুমকির যে অভিযোগ করা হয়েছে, এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।’

বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অভিযোগ করলেই ব্যবস্থা হবে, এমনটি বলা সঠিক নয়। কারণ, বিএনপির প্রার্থীসহ অন্যান্য প্রার্থীরা যেসব অভিযোগ করছেন, তার ভিত্তিতে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশের স্বার্থে প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মীরা সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছেন।’

১৭ অক্টোবর নওগাঁ-৬ আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী ছাড়াও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী ইন্তেখাব আলম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত ২৮ জুলাই আওয়ামী লীগের তিনবারের সাংসদ ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়।