নেত্রকোনায় দুই গ্রামবাসীর দফায় দফায় সংঘর্ষ, নিহত ১

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে তিন দিন ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। এতে মো. কামরুল ইসলাম (২৫) নামের এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার মাঘান সিয়াদার ইউনিয়নের সিয়াদার গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আজ দুপুরে এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহতের গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে প্রতিপক্ষ গ্রামের দোকানপাটে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থানা-পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ থামায়।

গত রোববার বিকেল থেকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন দুই গ্রামেই উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খুরশিমূল গ্রামের ওয়াকিব মিয়া ও রামপাশা গ্রামের শফিকুল ইসলাম ওরফে ছবির মধ্যে রোববার একটি বাইসাইকেল নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের জেরে পরদিন সোমবার সকালে সিয়াদার গ্রামের রিকশাচালক কামরুল ইসলাম তাঁর রিকশা নিয়ে বের হলে রামপাশা গ্রামের শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল লোক তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালান।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মাঘান সিয়াদার ইউনিয়নের খুরশিমূল গ্রামের ওয়াকিব মিয়া ও রামপাশা গ্রামের শফিকুল ইসলাম ওরফে ছবির মধ্যে রোববার একটি বাইসাইকেল নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের তিনজন—ওয়াকিব মিয়া, শাহীন মিয়া, হেলিম মিয়া আহত হন। এই সংঘর্ষের জেরে পরদিন সোমবার সকালে সিয়াদার গ্রামের রিকশাচালক কামরুল ইসলাম তাঁর রিকশা নিয়ে বের হলে রামপাশা গ্রামের শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল লোক তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে কামরুল ও মনিরুল নামের দুজন গুরুতর আহত হন। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কামরুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে তিনি মারা যান। অন্যদিকে রোববারের সংঘর্ষে আহত শাহীন মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় আজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে কামরুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আজ দুপুরে সিয়াদার গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুরের দিকে ওই গ্রামের কিছু লোক সংঘবদ্ধ হয়ে খুরশিমূল বাজারে প্রতিপক্ষের চারটি দোকানে হামলা ও লুটপাট চালান। খবর পেয়ে মোহনগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আহাদ খান জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতে সিয়াদার গ্রামের রুকন উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলাই এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।