নোয়াখালীতে নারী-পুরুষকে বেঁধে নির্যাতন, পুরুষের অর্ধনগ্ন ভিডিও প্রকাশ, গ্রেপ্তার ৫

নোয়াখালীর হাতিয়ায় নারী-পুরুষকে নির্যাতনের ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে দুই নারী-পুরুষকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। ওই পুরুষকে অর্ধনগ্ন করার ভিডিও রোববার সকালে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় করা মামলায় রোববার রাতেই উপজেলার চানন্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চানন্দি ইউনিয়নের মোল্লা গ্রামের মো. জিয়া ওরফে জিহাদ (৩০), আদর্শ গ্রামের মো. ফারুক (৩০), নবীর উদ্দিন ওরফে হোন্ড নবীর (৩২), আলমগীর হোসেন (৪০) ও আবু তাহের (২৭)। তাঁদের আজ সোমবার বিকেলে আদালতে হাজির করার কথা আছে।

ভিডিও প্রকাশের পর রোববার রাতে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় মামলা করেছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুরুষকে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষের ভেতর ঢুকানো হচ্ছে। কক্ষের ভেতর থেকে এক নারীর কান্নাকাটি ও চিৎকার শোনা যাচ্ছে।

পুরো ঘটনার বিষয়ে আজ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গণমাধ্যমের কর্মীদের ব্রিফিং করা হয়। ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, রোববার বিভিন্ন গণমাধ্যমে হাতিয়ার একটি নির্যাতনের ঘটনার খবর আসে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে একজন পুরুষকে মারধর করে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষের ভেতর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

পুলিশ সুপার জানান, বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, ১ জানুয়ারি হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের এক নারীকে স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের বাড়ির একটি ঘরে পেয়ে দুজনকে আটক করে মারধর করেন স্থানীয় উচ্ছৃঙ্খল কিছু লোক। একপর্যায়ে ওই পুরুষ কক্ষের জানালা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। উচ্ছৃঙ্খল লোকজন তাঁকে ধরে মারধর করে টেনেহিঁচড়ে আবার ঘরের ভেতর নিয়ে মারধর করেন। ওই দুই নারী–পুরুষকে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অপবাদ দিয়ে সুপারিগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।

পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনাটি একটি গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্যাতনের শিকার পুরুষের কাছ থেকে মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলায় তিনি ১১ জনকে আসামি করেছেন। এর মধ্যে পাঁচজনকে রোববার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ জানায়, নির্যাতনের ঘটনায় ধর্ষণের চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে ৫ জানুয়ারি নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ওই নারী। মামলাটি হাতিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তদন্ত করছেন।