নোয়াখালীতে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে আরও একটি ধর্ষণ মামলা

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় প্রবাসীর স্ত্রীকে (২৫) ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা মজিবুর রহমান ওরফে শরীফের বিরুদ্ধে আরও একটি ধর্ষণের মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখোলা ইউনিয়নের এক নারী বাদী হয়ে চাটখিল থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত বুধবার ভোরে নোয়াখালা ইউনিয়নের এক নারীকে ঘরের দরজা ভেঙে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় ওই দিনই গ্রেপ্তার করা হয় নোয়াখোলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মজিবুর রহমানকে (৩২)। বুধবার রাতে তাঁর ঘর তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করে চাটখিল থানার পুলিশ।

সর্বশেষ গতকাল রাতে দায়ের হওয়া ধর্ষণ মামলার বাদী নারী (২৭) অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে খাবার খেয়ে তিনি এবং তাঁর ছোট ভাই ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত দুইটার দিকে একই এলাকার যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমান তাঁর বাড়িতে এসে বসার ঘরের জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। এরপর মুজিবুর তাঁকে ঘরের দরজা খুলে দিতে বলেন। তিনি দরজা খুলতে না চাইলে মুজিবুর রহমান তাঁর হাতে থাকা অস্ত্র থেকে পরপর দুটি গুলি করে ছোড়ে।

ওই নারী আরও অভিযোগ করেন, গুলির ঘটনায় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তিনি ঘরের দরজা খুলে দেন। এ সময় মজিবুর রহমান ঘরে ঢুকে তাঁর ছোট ভাইকে গামছা দিয়ে হাত-মুখ বেঁধে রাখেন। পরে তাকে অস্ত্রের মুখে ঘরের অন্য একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় তিনি চিৎকার দিতে চাইলে মুজিবুর রহমান তাঁর হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে তাঁর মুখে আঘাত করেন। ঘটনার পর মজিবুর রহমান তাঁকে ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে চলে যান। ঘটনার পরপরই তিনি ঢাকায় থাকা তাঁর স্বামীকে বিষয়টি জানান। পরদিন স্বামী বাড়িতে এসে তাঁর কাছ থেকে পুরো ঘটনা শুনেছেন। কিন্তু মজিবুর রহমান প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে তিনি মামলা করার সাহস পাননি। বুধবার মুজিবুর রহমান অন্য এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন।

এ বিষয়ে চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে সংঘটিত ঘটনার উল্লেখ করে এক নারী যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। পরামর্শ অনুযায়ী নারীর দেওয়া অভিযোগটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।

ওসি আনোয়ারুল ইসলাম আরও জানান, দ্বিতীয় ধর্ষণের মামলাটিতে মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এ ছাড়া এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মজিবুর রহমান বর্তমানে একটি ধর্ষণ ও একটি অস্ত্র মামলায় চার দিনের রিমান্ডে চাটখিল থানায় আছেন।