‘নৌকা সরে গিয়ে সমর্থন দিচ্ছে বিএনপির নেতাকে’

ইউপি নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

প্রতীক বরাদ্দের আগে থেকেই বগুড়া সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলীম উদ্দিনের সমর্থকদের সঙ্গে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বদরুল আলমের সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিসংযোগ ও হত্যার চেষ্টার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি কয়েকটি মামলাও হয়েছে।

ভোটের দিন জানা গেল, নৌকার প্রার্থী আলীম উদ্দিন শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভোটের এক দিন আগে গতকাল শনিবার সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। আজ রোববার এই ইউনিয়নের কোনো কেন্দ্রেই নৌকার এজেন্ট দেখা যায়নি। আলীম উদ্দিন নিজেও মাঠে অনুপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগ উঠেছে, নৌকার প্রার্থী আলীম উদ্দিন মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তাঁর সমর্থকদের অটোরিকশা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ মো. আবদুর রশীদকে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আবদুর রশীদ নুনগোলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুল আলম বলেন, ভোটে নিশ্চিত পরাজয় জেনে নৌকার প্রার্থী মাঠ ছেড়েছেন। তাঁর কর্মী-সমর্থকদের বিএনপির প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন।

তবে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলীম উদ্দিনের দাবি, দলীয় নেতা-কর্মীদের অসহযোগিতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ কারণে কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট নেই। যেহেতু এখন আর মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ নেই, এ কারণে নৌকার ব্যালট থাকবে, কেউ নৌকার প্রতি ভালোবাসা থেকে ভোট দিতেই পারেন। তবে অন্য কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার কথা সত্যি নয়।

তৃতীয় দফায় বগুড়া সদর, শাজাহানপুর ও ধুনট উপজেলার ২৭টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আজ সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ চলছে। তিন উপজেলার ২৬০ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৪২টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়নে মাঝিড়া উচ্চবিদ্যালয় ও মাঝিড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কক্ষের ভেতরেই নৌকার পক্ষে ভোট কেনা এবং ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ ওঠে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর এজেন্টদের বিরুদ্ধে।

বেলা ১১টায় এই ইউনিয়নে নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিপন বিশ্বাস অভিযোগ পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে নৌকার এজেন্টদের কাছ থেকে ১৫টি মুঠোফোন, ২০ ও ৫০০ টাকার দুই বান্ডিল টাকা জব্দ করেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিপন বিশ্বাস এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে কোনো প্রার্থীর এজেন্টের কাছে মুঠোফোন এবং টাকা রাখা নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন। এ কারণে মুঠোফোন ও টাকা জব্দ করে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়েছে। পরে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।