নৌকার প্রার্থীর অভিযোগ, ‘বিদ্রোহী’র পক্ষে নেতারা

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় আওয়ামী লীগে দুই ধারার রাজনীতির প্রভাব পড়েছে পৌরসভা নির্বাচনেও। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওয়াজেদ আলী অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় সাংসদ জিল্লুল হাকিম ও তাঁর অনুসারীরা নৌকার পক্ষে কাজ করছেন না। বরং তাঁরা দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।

তৃতীয় ধাপে ৩০ জানুয়ারি পাংশায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের ওয়াজেদ আলী ও দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ফজলুল হক। ফজলুল হক উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ছিলেন। তাঁকে ২০ জানুয়ারি সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রইচ উদ্দিন খান।

ওয়াজেদ আলী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। পরে তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। তাঁর ভাই ফরিদ হাসান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। তাঁরা দুজন রাজবাড়ী-২ আসনের (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) সাংসদ জিল্লুল হাকিমের বিরোধী পক্ষ হিসেবে পরিচিত।

দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন ফজলুল হক। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গিয়েছিল। পরে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিট হওয়ার কথা ছিল। রিটে নৌকার প্রার্থিতা বাতিল হলে ধানের শীষ বিজয়ী হয়ে যেত। এ কারণে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম।’

তবে নৌকার প্রার্থী ওয়াজেদ আলী অভিযোগ করেন, দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর মূল মদদদাতা সাংসদ জিল্লুল হাকিম। তাঁর ঘনিষ্ঠজন ও অনুসারীরা নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চাইছেন না। কেউ মাঠে নামছেন না। গোপনে তাঁরা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

সাংসদ জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। স্থানীয় নির্বাচনে সাংসদ হিসেবে মাঠে থাকার সুযোগ নেই। আমি বাড়িতেই যাচ্ছি না। জেলায় মিটিং করে ঢাকা চলে আসছি। কারণ, নির্বাচনে হারলে বলবেন, আমি হারিয়ে দিয়ে এসেছি।’

সাংসদ আরও বলেন, নৌকার প্রার্থী ওয়াজেদ আলী ও তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে দলের নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ রয়েছে। ৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় প্রতিবাদ মিছিল শুরু হওয়ার আগে ওয়াজেদ মণ্ডল ও তাঁর ভাইদের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ রয়েছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ককে মারধর করা হয়। এরপরও উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতারা নৌকাকে সমর্থন দিয়েছেন। তাঁরা নৌকাকে বিজয়ী করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ এফ এম শফিউদ্দিন সাংসদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। শফিউদ্দিনের বিরুদ্ধেও নৌকার প্রচারণায় যোগ না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ওয়াজেদ আলী।

এ এফ এম শফিউদ্দিন বলেন, ‘আমার রক্তে নৌকা মিশে আছে। আমার ওপর তাঁরা হামলা করেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে (ওয়াজেদ আলী) চাইনি। তবে তাঁকে নৌকা দেওয়ায় মেনে নিয়েছি। যৌথ সভা করে তাঁকে সমর্থন দিয়েছি। সাংসদের নির্দেশে সবাই নৌকা প্রতীক বিজয়ী করতে কাজ করছেন। ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার জন্য সাংসদ ও আমাদের বিরুদ্ধে এসব কথা বলা হচ্ছে।’