নৌকার বিরোধিতা করা ২ নেতা পেলেন নেতৃত্ব

বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আজাহার আলীকে সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শরিফুজ্জামান সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন।

রাজশাহী জেলার মানচিত্র

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় যাঁরা নৌকার বিরোধিতা করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছিলেন, এবার সম্মেলনে তাঁদেরই দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা এ নিয়ে দলীয় সভাপতি বরাবর অভিযোগ পাঠিয়েছেন।

গত বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আজাহার আলীকে সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ নতুন নেতাদের নাম ঘোষণা করেন। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান ফিরোজের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম।

সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক সুকুমার রায়। তাঁরা বলছেন, তাঁদের মতামত না নিয়ে বা কাউন্সিলরদের ভোট না নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচনের বিরোধিতা করে তাঁরা কেন্দ্রে অভিযোগ পাঠিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালে দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম। মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মজিদ সরদার। ওই নির্বাচনে আজাহার আলী ও শরিফুজ্জামান নৌকার বিরোধিতা করে বিদ্রোহীর পক্ষে অবস্থান নেন। প্রচারণার সময় ওই দুই নেতাসহ ১২ জন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তাঁদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও একটি রিভলবার পাওয়া গিয়েছিল। নির্বাচনে টাকা ছড়ানো ও ভয় দেখিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের পাঁচ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে নবনির্বাচিত সভাপতি আজাহার আলী প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৯ সালে যাঁরা নৌকার বিরোধিতা করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। এ জন্য তাঁরা প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভা শেষে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, যাঁরা নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন, তাঁরা কোনো কমিটিতে প্রার্থী হতে পারবেন না। দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগের দিন বিষয়টি কামাল হোসেনকে জানানো হয়েছিল।

এস এম কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি কেউ তাঁকে জানাননি। এ বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁরা দায়িত্বে থাকতে পারবেন না।