নড়বড়ে সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সিংগুয়ারপাড়-মির্জাবাজারে সিংগুয়ার নদ এলাকায় নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছে মানুষ। সাম্প্রতিক ছবি।
প্রথম আলো

ভাঙা কাঠের নড়বড়ে একটি সাঁকো। পাটাতনের অনেক অংশে কাঠ ভেঙে গেছে। ১২টি নড়বড়ে খুঁটিতে সাঁকোটি দাঁড়িয়ে আছে। কেউ সাঁকো দিয়ে পার হতে গেলে সাঁকোটি দুলে ওঠে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে ১১ গ্রামের মানুষ এই সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে।

সাঁকোটি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়নের সিংগুয়ারপাড়-মির্জাবাজারে সিংগুয়ার নদের ওপর। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের।

রুহিপাগারিয়া গ্রামের শিক্ষক মারফত আলী বলেন, সাঁকোতে উঠতে পথচারীরা ভয় পায়। তবুও ঝুঁকি নিয়ে ১১ গ্রামের মানুষ নিরুপায় হয়ে চলাচল করে। কারণ, ২ মিনিটের রাস্তার জন্য তো ১০ কিলোমিটার ঘোরা সম্ভব হয় না।

জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিংগুয়ার নদের ওপর ২০১৫ সালে একটি সাঁকো নির্মাণ করা হয়। এর দৈর্ঘ্য ১০৫ ফুট ও প্রস্থ ৫ ফুট। এই সাঁকোর ৫০০ মিটার দূরে রয়েছে মির্জাবাজার। এই সাঁকোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ জুগলী, পলাশতলা, নয়াপাড়া, মনকান্দা, গামারিতলা, খলিসাকুড়া, রুহিপাগারিয়া, গুনিয়ারিকান্দা, বাগিচাপুর, নিজপাড়া ও সিংগুয়ারপাড় গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে।

এসব গ্রামের শিক্ষার্থীরা এই সাঁকোর ওপর দিয়ে সিংগুয়ারপাড়, দক্ষিণ পলাশতলা ও বেগম রওশন ও ডা. আমজাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিজপাড়া এসএসডিপি মডেল উচ্চবিদ্যালয়, নিজপাড়া আলিম মাদ্রাসা, খলিসাকুড়া দাখিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। এ ছাড়া ১১ গ্রামের শতাধিক মোটরসাইকেল এই সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করে। এ সাঁকো না থাকলে ৮–১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে এলাকার লোকজনকে চলাচল করতে হয়। তাই এলাকাবাসী বাঁশ দিয়ে কয়েকবার সাঁকোটি সংস্কার করেন।

স্থানীয় ব্যক্তিরা আরও বলেন, গত বছর সাঁকোর এক পাশের কাঠের পাটাতন ভেঙে নদে পড়ে যায়। সাঁকোতে থাকা ১২টি খুঁটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। তাই তাঁদের দুর্ভোগ কমাতে এলাকাবাসী একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানান।

রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান সম্প্রতি বলেন, সাঁকোটি সংস্কারের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।

ইউএনও মো. মাহফুজুল আলম বলেন, বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান তাঁকে জানিয়েছেন। সেখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য বাৎসরিক পরিকল্পনায় প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হবে।