পঞ্চগড়ে আসামিদের জন্য কাঠগড়ায় বিছানো হলো কার্পেট

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাঠগড়ায় বিছানো হয়েছে কার্পেট
ছবি: সংগৃহীত

মামলার নির্ধারিত তারিখে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় আসামিদের, বসিয়ে রাখা হয় কাঠগড়ায়। আদালতকে সম্মান জানাতে আসামিরা জুতা খুলে ওঠেন কাঠগড়ায়। মামলার ডাক না পড়া পর্যন্ত কাঠগড়ার মেঝেতেই বসে থাকতে হয় তাঁদের। এ ছাড়া জামিনে থাকা আসামিরাও আদালতে আসেন হাজিরা দিতে। শীতের দিনে খালি পায়ে কাঠগড়ার শীতল মেঝেতে থাকা আসামিদের কষ্ট দূর করতে কাঠগড়ায় কার্পেট বিছানোর ব্যবস্থা করেছেন এক বিচারক।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমানের এজলাসে প্রথমবারের মতো এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত বুধবার তিনি তাঁর এজলাসের কাঠগড়ায় কার্পেট বিছিয়েছেন। তাঁর এমন উদ্যোগের পর পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল আদালতের সব কাঠগড়ায় কার্পেট বিছানো হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় হিমালয়ের খুব কাছাকাছি হওয়ায় এখানে শীত কিছুটা আগেভাগেই আসে। শীতের অধিকাংশ দিনে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে পঞ্চগড়ে। কাঠগড়ার মেঝে শীতের দিনে খুবই ঠান্ডা হয়ে যায়। এতে আসামিদের অনেক কষ্টে সেখানে থাকতে হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষমাণ কারাগার থেকে আসা আসামিদের শীতের কষ্ট অনুভব করেই বিচারক কার্পেট বিছানোর উদ্যোগ নেন।

অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আদালতের কাঠগড়ার মেঝেটি মোজাইক করা। এ জন্য সেখানে শীতের সময় প্রচণ্ড ঠান্ডা অনুভূত হয়। আদালতের বিচারক, আইনজীবীসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী জুতা পড়েই থাকেন। অথচ আসামিরা দীর্ঘ সময় জুতা খুলে কাঠগড়ার শীতল মেঝেতে বসে থাকেন। বিষয়টি বিচারক মতিউর রহমানের মনে নাড়া দেয়। এরপর তিনি কাঠগড়ায় কার্পেট বিছানোর ব্যবস্থা করেন।

পঞ্চগড় আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আমিনুর রহমান বলেন, ‘আদালতের কাঠগড়ায় আসামিদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে কার্পেট বিছানোর ঘটনা পঞ্চগড়ে এটাই প্রথম। আমার বিশ্বাস, একজন বিচারকের এ ধরনের মানবিক সিদ্ধান্ত সত্যিই অন্য সব আদালতের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।’