পদ্মা তীরের মাটি কেটে বিক্রি, ভাঙনের ঝুঁকিতে বাঁধ

ফরিদপুরে তীর সংরক্ষণ বাঁধ হুমকিতে ফেলে পদ্মার কোল থেকে বালু তোলা হচ্ছে। সম্প্রতি ফরিদপুর সদরের ডিক্রীরচর ইউনিয়নের ধলার মোড় এলাকায়
প্রথম আলো

ফরিদপুর সদর উপজেলায় পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধের কাছ থেকে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ছে বাঁধ।

উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ধলার মোড় এলাকায় তীর সংরক্ষণ বাঁধের ৩০ থেকে ৪০ মিটার দূর থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। গত সোমবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচটি এক্সাভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এসব বালু-মাটি ট্রাকে করে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে। অন্তত ২০টি ট্রাকে মাটি ভর্তি করতে দেখা যায়।

ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১ মাস ধরে অন্তত ২০টি এক্সাভেটর দিয়ে রাতদিন সমানে মাটি কাটা হচ্ছে। শতাধিক ট্রাক পরিবহনের কাজ করছে। মাটি কাটার সঙ্গে এলাকার বাসিন্দা সেলিম মৃধা, মো. নজরুল, দুলাল মীর, আজম মুনশি, রব শেখ, আসাদ মীর, শহীদ মীর প্রমুখ জড়িত।

ওই এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা বলেন, ট্রাকে করে মাটি নেওয়া হচ্ছে। ধুলার কারণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ধুলা-বালুর কারণে চায়ের দোকানে বসা যায় না। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

ওই জায়গা থেকে মাটি কাটার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়নি। অনুমতি দেওয়ার কোনো ক্ষমতাও তাঁর নেই।
সুলতান মাহমুদ, ফরিদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী

মাটি কাটার কাজে জড়িত সেলিম মৃধা বলেন, তিনি পৈতৃক জায়গা থেকে বালু তুলছেন। কর্তৃপক্ষকে ‘ম্যানেজ’ করে এই কাজ করছেন। এ বিষয়ে ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ভালো বলতে পারবেন।

তবে ডিক্রিরচর ইউপির চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমি মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত নই। কি প্রক্রিয়ায়, কারা মাটি কাটছেন, তা আমার জানা নেই। অন্যায়ভাবে আমার নাম জড়ানো হচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুম রেজা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্মতি নিয়ে ওই ব্যক্তিরা নিজ জমি থেকে মাটি কাটছেন বলে তাঁকে জানানো হয়েছিল।

এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, এতে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের ক্ষতি হবে কি না, তা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলতে পারবে। বিষয়টি নিয়ে তিনি পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলবেন।

ফরিদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, ওই জায়গা থেকে মাটি কাটার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়নি। অনুমতি দেওয়ার কোনো ক্ষমতাও তাঁর নেই।

সুলতান মাহমুদ আরও বলেন, নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধের ৫০ মিটার দূর থেকে বালু কাটা হচ্ছে। ৫০০ মিটার দূর থেকে বালু কাটলেও পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধের ক্ষতি হবে। মাটি কাটা বন্ধের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।