পদ্মা সেতু দেখতে জাজিরা প্রান্তে দর্শনার্থীদের ভিড়

জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা টোল প্লাজার সামনে। আজ বিকেলে তোলা
ছবি : প্রথম আলো

ঈদের পরের দিন পদ্মা সেতু দেখতে আসছেন মানুষ। দুপুর থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা টোল প্লাজার সামনে ভিড় বাড়তে থাকে। পরিবারের সদস্য, বন্ধুবন্ধব ও অনেকে কর্মস্থলের সহকর্মীদের নিয়ে ঘুরতে আসেন।

জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়েছে। তার পাশে ইলিশের ভাস্কর্য ও ফোয়ারা নির্মাণ করা হয়েছে। মানুষ ওই সব স্থাপনা দেখছেন।

সেতু–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজা নাওডোয়। এর পাশে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষর সার্ভিস এরিয়া–২ ,শেখ রাসেল সেনানিবাস অবস্থিত। পদ্মা সেতুর সাড়ে ১০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে শিবচরের পাচ্চর পর্যন্ত। সংযোগ সড়ক, সার্ভিস এরিয়া–২ ও সেনানিবাসের বিভিন্ন স্থানে বনায়ন করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে বাহারি ফুলের গাছ। সেতু দেখতে আসা মানুষ ওই সব স্থানে ঘুরছেন, সময় কাটাচ্ছেন, ছবি তুলছেন।

একটি খোলা ট্রাকে চড়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে ৪০ জন দর্শনার্থী এসেছেন জাজিরার নাওডোবায়। টোল প্লাজার আশপাশে দুই ঘণ্টা অবস্থান করে ওই দলটি সেতু পেরিয়ে মুন্সিগঞ্জ প্রান্তে যায়। তাদের দলের একজন সিফান হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক। পদ্মা সেতু দেখার একটি শখ ছিল। ঈদের ছুটিতে চলে আসছি। খুব আনন্দ করলাম।’

নড়াইলের লোহাগড়ার বাসিন্দা আরমান খান চট্রগ্রামে চাকরি করেন। সব সময় পদ্মা নদী পারাপার হয়ে কর্মস্থলে যাতায়াত করেন। এ বছর ঈদের ছুটিতে গ্রামে এসেছেন পদ্মা সেতু পেরিয়ে। আজ সোমবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছেন সেতু এলাকায় ঘুরতে। তিনি বলেন, ‘পদ্মা নদী আমাদের যোগাযোগব্যবস্থা অনেক দুর্গম করে রেখেছিল। পদ্মা সেতু সেই যোগাযোগ সহজ করেছে।’

টাঙ্গাইলের একটি কলেজ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী বাস নিয়ে আজ পদ্মা সেতু দেখতে আসেন। তাঁদের দলের একজন তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগে সেতুর নির্মাণকাজ দেখতে এসেছিলাম। আজ ৪০ বন্ধু একসঙ্গে বাসে করে স্বপ্নের পদ্মা সেতু পার হয়েছি। আমরা খুব আন্দিত, উচ্ছ্বাসিত।’

বরিশালের আগৈলঝাড়ার বাসিন্দা হুমায়ুন কবীর গত ৩০ জুন বিয়ে করেছেন। আজ তিনি স্ত্রী রেশমাকে নিয়ে পদ্মা সেতু এলাকায় ঘুরতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘রেশমাকে নিয়ে প্রথম কোথায়ও বেড়াতে বের হলাম। প্রথম ভেবেছিলাম কুয়াকাটা যাব। পরে রেশমার অনুরোধে সিদ্ধান্ত পাল্টে পদ্মা সেতু এলাকায় এসেছি। সারা দিন ঘুরেছি। পদ্মা সেতু দিয়ে একবার জাজিরা থেকে মাওয়া ও আরেকবার মাওয়া থেকে জাজিরা প্রান্তে এসেছি। অনেক আনন্দে একটি দিন কাটিয়েছি।’

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘সকাল থেকেই সেতুর জাজিরা প্রান্তে মানুষ আসছেন। টোল প্লাজার আশপাশ দিয়ে ঘুরছেন, সময় কাটাচ্ছেন। আমরাও তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কাজ করছি।’