পদ্মা–যমুনার মোহনায় ধরা পড়ল ৫১ হাজার টাকার কাতল

পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় ধরা পড়া ৩০ কেজি ওজনের কাতল মাছ। আজ মঙ্গলবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে
ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় প্রায় ৩০ কেজি ওজনের একটি বড় কাতল মাছ ধরা পড়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় জয়নাল হালদার নামের জেলের জালে বিশাল আকারের এ কাতল মাছটি ধরা পড়ে। মাছটি ঢাকার এক ব্যক্তি ৫১ হাজার টাকায় কিনেছেন।

দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটসংলগ্ম মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে পদ্মা নদীর দৌলতদিয়ার শেষ সীমানায় পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় জাল ফেলেন জেলে জয়নাল হালদার। দীর্ঘক্ষণ জাল ফেলে তেমন মাছ না পাওয়ায় হতাশ হন। একপর্যায়ে কয়েক দফা জাল ফেলে টেনে তোলার পর শেষ দিকে ফ্যাশন জালে একটি ঝাঁকি দিলে বুঝতে পারেন বড় কোনো মাছ ধরা পড়েছে। ঠিক তাই, জাল টেনে নৌকায় তুলতে গিয়ে দেখতে পান বিশাল আকারের একটি কাতল মাছ ধরা পড়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে নদীতে তেমন একটা মাছের দেখা মিলছে না বললেই চলে। হঠাৎ করে এত বড় মাছ ধরা পড়ায় জেলে জয়নাল হালদার ও তাঁর সহযোগীদের বাঁধভাঙা আনন্দ দেখা দেয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, জেলে জয়নাল মাছটি পাওয়ার পরই বিষয়টি মুঠোফোনে ঘাটের ব্যবসায়ীদের জানান। সঙ্গে সঙ্গে মাছটি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন দৌলতদিয়া বাইপাস সড়কসংলগ্ন মাছবাজারে স্থানীয় দুলালের আড়তে। সেখানে মাছটি বিক্রির জন্য প্রকাশ্য নিলাম আহ্বান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ব্যবসায়ীদের মধ্যে চান্দু মোল্লা সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে তিনি মাছটি কিনে নেন। এ সময় মাছটি ওজন দিয়ে দেখতে পান প্রায় ৩০ কেজি ১০০ গ্রাম ওজন হয়েছে। যার দাম আসে প্রায় ৪৮ হাজার টাকা। পরে মাছটি কিনে চান্দু মোল্লা নিয়ে আসেন তাঁর আড়তে। সেখান থেকে দ্রুত মাছটি ফেরিঘাটের পন্টুনের সঙ্গে রশি দিয়ে পানিতে ভাসিয়ে রাখেন। এ সময় ফেরিঘাট এলাকার উৎসুক মানুষ ভিড় করেন একনজর দেখতে।

মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা বলেন, কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বেশি হলে অর্থাৎ ১ হাজার ৭০০ টাকা কেজি করে তিনি মাছটি বিক্রি করবেন বলে মনস্থির করেন। এরপর ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পরিচিতজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে বিপাকে পড়েন লকডাউনের মধ্যে যথাস্থানে মাছটি পাঠানো নিয়ে। পরে ঢাকার এক পরিচিত ব্যবসায়ীর কাছে ১ হাজার ৭০০ টাকা কেজি দরে মোট ৫১ হাজার টাকায় কাতল মাছটি বিক্রি করেন। এরপর ঝুঁকি নিয়ে বিকেলে মোটরসাইকেলে করে ঢাকায় ওই ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেন।

গোয়ালন্দ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা মো. রেজাউল শরীফ বলেন, পদ্মা নদীর সুস্বাদু পানির মাছ কার না পছন্দ। সম্প্রতি পদ্মা নদীতে বড় মাছের তেমন একটা দেখা মেলে না। এর মাঝে এত বড় একটি কাতল মাছ ধরা পড়েছে, এটা অবশ্যই সুখবর। ভবিষ্যতেও এ রকম আরও অনেক বড় বড় মাছ ধরা পড়বে বলে তিনি মনে করেন।