পদ্মার দুর্গম চরের ১২ গ্রামে জ্বলল বিদ্যুতের আলো

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নে পদ্মার দুর্গম চরের ১২টি গ্রামে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এর উদ্বোধন করেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম
ছবি: প্রথম আলো

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের ১২টি গ্রামে জ্বলল বিদ্যুতের আলো। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ এ কে এম এনামুল হক শামীম আজ মঙ্গলবার দুপুরে কাচিকাটা, চরজিংকিং ও বোরকাঠি বাজারে লাইট জ্বালিয়ে ১ হাজার ৬৮ পরিবারের বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার কাজের উদ্বোধন করেন। পদ্মার তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে চরে বিদ্যুতের লাইন নেওয়া হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুর জেলার ওপর দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত হয়েছে। পদ্মা নদী ভেদরগঞ্জের কাচিকাটা, নড়িয়ার চরআত্রা, নওপারা ও জাজিরার কুন্ডেরচর ইউনিয়নকে বিচ্ছিন্ন করেছে। ওই চার ইউনিয়নের ৭৯টি গ্রামে অন্তত এক লাখ মানুষের বসবাস। চরগুলোতে নৌপথে যাতায়াত করতে হয়। চরগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেন স্থানীয় সাংসদ ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। কিন্তু শরীয়তপুর থেকে পদ্মা নদী পেরিয়ে চরে বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তখন মুন্সিগঞ্জ থেকে পদ্মার তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের সাহায্যে বিদ্যুৎ আনার সিদ্ধান্ত হয়। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে চরে বিদ্যুৎ নেওয়ার কাজ শুরু হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নড়িয়ার চরআত্রা ও নওপারা ইউনিয়নে প্রথম বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া শুরু হয়।

মুন্সিগঞ্জের দীঘিরপাড় থেকে নড়িয়ার নওপারার পদ্মা নদীর দূরত্ব এক কিলোমিটার। ওই এক কিলোমিটার নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের সাহায্যে বিদ্যুৎ আনা হয় নওপারা ১০ এমভিএ সাবস্টেশনে। সেখান থেকে ৪২৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে চরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। চরআত্রা, নওপারা, কুন্ডেরচর ও চাঁদপুরের একলাশপুর ইউনিয়নে ৪ হাজার ৫৬০ পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আর আজ কাচিকাটা ইউনিয়নের ১ হাজার ৬৮ পরিবারকে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হলো। ওই চরগুলোতে আরও ১৮ হাজার ৫০০ পরিবারকে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হবে।

চরজিংকিং গ্রামের মেহেদী হাসান বলেন, এটি ৮০ বছরের পুরোনো চর। চারদিক দিয়ে পদ্মা নদী। নৌপথ ছাড়া যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা নেই। এমন দুর্গম চরে বিদ্যুতের আলো জ্বলবে, এটা তিনি কখনো ভাবতে পারেননি। ঘরে বিদ্যুতের আলো পেয়ে চরবাসী আজ উৎসব করছে।

এনামুল হক শামীম প্রথম আলোকে বলেন, নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে চরের মানুষ সবার জন্য খাবার উৎপাদন করেন। সেই কষ্টে থাকা মানুষদের নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। বিদ্যুৎসেবা পেয়েছে; শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগসহ অন্য সব সুবিধাও চরের মানুষ পাবে।