পদ্মার পানির স্তর নিচে নামায় আবারও সেচ প্রকল্পে সরবরাহ বন্ধ

কুষ্টিয়া জেলার মানচিত্র
প্রতীকী ছবি

পদ্মা নদীতে পানির স্তর আরও নিচে নেমে গেছে। এতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের খালে পানি সরবরাহ আবারও বন্ধ হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটা থেকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

এর আগে গত ২৬ মার্চ একইভাবে পানি সরবরাহ বন্ধ ছিল। এরপর ৫ এপ্রিল থেকে পানির উচ্চতা বেড়েছিল। ২০১৬ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে একই কারণে ১০ দিন পাম্প বন্ধ ছিল।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রধান পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দুটি পাম্পে পানি সরবরাহ শূন্যে নিয়ে আসা হয়েছে। পদ্মার পানির স্তর ব্যাপক হারে নিচে নেমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে আবারও এটা করা হয়েছে।

পদ্মায় পানির স্তর স্বাভাবিক থাকলে প্রতি পাম্পে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ২৮ হাজার ৩১৬ দশমিক ৮৫ লিটার পানি সরবরাহ হয়ে থাকে। দুটি পাম্পে ২৪ ঘণ্টা পানি তোলা হয়।

এদিকে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন কুষ্টিয়াসহ চারটি জেলার কৃষকেরা। এই পানি দিয়ে ৪ জেলার ১৩ উপজেলার পৌনে ৫ লাখ একর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় বোরো ও পাটখেতে সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া জিকের নালাগুলো পানিতে ভর্তি থাকলে কুষ্টিয়া শহরসহ আশপাশের উপজেলাগুলোর টিউবওয়েল সচল থাকে। বর্তমানে টিউবওয়েল দিয়ে পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না। এতে বাসাবাড়ির বাসিন্দারা চরম বিপাকে পড়েছেন।

পাউবো সূত্র জানায়, বছরের ১০ মাস (১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত) দিনরাত ২৪ ঘণ্টা দুটি পাম্পের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা হয়। বাকি দুই মাস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু হঠাৎ গত ২৬ মার্চ পদ্মায় পানির স্তর গড়ে ৪ দশমিক ১৫ মিটার রিডিউসড লেভেল (আরএল) নিচে নেমে যায়। সে সময় পাম্প দুটির সরবরাহ শূন্য করতে হয়। স্বাভাবিক পর্যায়ে ৪ দশমিক ৫০ লেভেল পর্যন্ত পাম্প পানি সরবরাহ করতে পারে।

একইভাবে ভারতের ফারাক্কা বাঁধ থেকে ১৫ এপ্রিল পানি ছাড়া বন্ধ হয়ে যায়। এতে পদ্মার পানির উচ্চতা আরও কমতে থাকে। বর্তমানে পানির স্তর ৪ মিটারের নিচে, যা গত ২৬ মার্চের চেয়ে অনেক কম।

গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রধান পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ফারাক্কা থেকে এ মাসের ২০ তারিখ পানি ছাড়ার কথা রয়েছে। পানি ছাড়লে উচ্চতা বাড়বে। তখন পাম্প চালানো হবে। তবে এভাবে কত দিন চলবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।