পরিবারের দাবি, পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ

লাশ
প্রতীকী ছবি

ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার ভেতর থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হত্যা মামলার আসামি মামুন মিয়াকে (২৭) পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার তাঁর পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, মামুনকে হত্যা করে তাঁর লুঙ্গি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শৌচাগারে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

মামুনের বোন শারমিন বেগম বলেন, ‘পুলিশ বলেছে, আমার ভাই জানালার সঙ্গে লুঙ্গি পেঁচিয়ে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু আমার ভাইয়ের ঘাড় ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশই আমার ভাইকে নির্যাতন করে পিটিয়ে হত্যা করেছে।’

পুলিশ হাজতখানায় নিয়ে গিয়ে আমার ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।
মাকসুদা বেগম, নিহত মামুনের মা

গত রোববার পুলিশ নবাবগঞ্জের দেওতলা এলাকার ঝোপ থেকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের লস্করপুর গ্রামের ইয়াকুব আলী ঢালীর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সোমবার রাজিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া মামুনকে মারধর করে শ্রীনগর থানায় হস্তান্তর করেন লোকজন। পরের দিন মঙ্গলবার মামুনকে নবাবগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।

নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ জানায়, গতকাল দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন মামুন। এরপর পুলিশ তাঁকে হাজতে আটক রাখে। এক ফাঁকে মামুন তাঁর পরনের লুঙ্গি দিয়ে শৌচাগারের জানালার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়েন। পুলিশ বিকেলে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। উপজেলা কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

থানায় যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটির সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে। মামুনের পরিবারের অভিযোগ ঠিক নয়। এরপরও যে কেউ অভিযোগ করতে পারেন।
মারুফ হোসেন সরদার, এসপি

বুধবার সকালে মর্গের সামনে মামুনের স্ত্রী পিংকি বেগম বলেন, ‘মামুন নারী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। অথচ ওই নারীর ভাশুর ইমান ঢালী, জামাল ঢালী ও আত্মীয়েরা মামুনকে পিটিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এরপর পুলিশ মামুনকে জেলহাজতে নিয়ে আবারও পেটালে মামুন মারা যান। পুলিশ মামুনের লুঙ্গি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে টয়লেটের জানালার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাঁরা দোষী তাঁরা বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আর যে নির্দোষ তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার ছোট ছোট দুটি সন্তানকে এখন কে দেখবে?’

মামুনের মা মাকসুদা বেগমও বলেন, ‘পুলিশ হাজতখানায় নিয়ে গিয়ে আমার ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, থানায় যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটির সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে। মামুনের পরিবারের অভিযোগ ঠিক নয়। এরপরও যে কেউ অভিযোগ করতে পারেন।