পর্বতারোহী রেশমাকে চাপা দেওয়া গাড়ির চালকের বিচার দাবি

পর্বতারোহী রেশমা নাহারকে চাপা দেওয়ার ঘটনায় জড়িত গাড়ির চালকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন। বৃহস্পতিবার নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পরিষদের সামনের সড়কেপ্রথম আলো

পর্বতারোহী রেশমা নাহার যে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপায় নিহত হয়েছিলেন, সেই গাড়ির চালকের বিচারের দাবিতে নড়াইলের লোহাগড়ায় মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে লোহাগড়া-নড়াইল সড়কে উপজেলা পরিষদের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

লোহাগড়া উপজেলাবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধনে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। সড়ক দুর্ঘটনায় রেশমার নিহত হওয়ার ঘটনাকে হত্যা আখ্যা দিয়ে তাঁরা ইউএনওর মাধ্যমে এই ঘটনার বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। রেশমার বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ধোপাদহ গ্রামে।

পর্বতারোহী রেশমা নাহার
ফাইল ছবি

পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ৭ আগস্ট সকালে বাইসাইকেল চালানোর সময় রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানের সামনের সড়কে একটি ব্যক্তিগত গাড়ির চাপায় নিহত হন রেশমা নাহার ওরফে রত্না (৩২)। রেশমার ভাই সেলিম শিকদার জানান, এ ঘটনায় তাঁর বড় বোনের ভগ্নিপতি মো. মনিরুজ্জামান শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ওই ব্যক্তিগত গাড়ির চালককে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি এখন কারাগারে আছেন। গাড়িটিও জব্দ করা হয়েছে।

গত ৭ আগস্ট সকালে বাইসাইকেল চালানোর সময় রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানের সামনের সড়কে একটি ব্যক্তিগত গাড়ির চাপায় নিহত হন রেশমা নাহার ওরফে রত্না (৩২)। তাঁর বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ধোপাদহ গ্রামে।

দুর্ঘটনার পরদিন রেশমাকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। রেশমা ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বীর বিক্রম আফজাল হোসেন শিকদারের মেয়ে। তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে রেশমা সবার ছোট। চার বোনই ছিলেন শিক্ষক। রেশমা ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। থাকতেন মিরপুর এলাকার সরকারি কোয়ার্টারে।


পরিবারের সদস্যরা জানান, রেশমা ছোটবেলা থেকেই ছিলেন উদ্যমী ও কর্মচঞ্চল। পাহাড়ে ওঠা, গান, আবৃত্তি, সাইকেল চালানো—এগুলো ছিল তাঁর ভীষণ পছন্দ। বাংলাদেশের কেওক্রাডংয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে রেশমা পর্বত অভিযান শুরু করেন। আশপাশের দেশে পর্বত পাড়ি দিয়েছেন। ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিংয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার স্বপ্ন দেখছিলেন। সে জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাবেক সাংসদ শেখ হাফিজুর রহমান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম এ হান্নান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দীন, সাংবাদিক রূপক মুখার্জি, কলেজশিক্ষক মো. কবির হোসেন, স্কুলশিক্ষক হান্নান বিশ্বাস ও মফিজুর রহমান, ব্যবসায়ী বি এম লিয়াকত হোসেন, যুবলীগের নেতা শেখ সদরউদ্দীন শামীম, শ্রমিক নেতা মিজানুর রহমান প্রমুখ।