পাঁচ কাউন্সিলরের ভূরিভোজ: রেস্তোরাঁয় মিলেছে পাখির মাংস, জরিমানা

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর বাজারে পাখির মাংস বিক্রি করা রেস্তোরাঁয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। আজ রোববার বিকেলে
প্রথম আলো

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুরবাজারে সিলেট সিটি করপোরেশনের পাঁচ কাউন্সিলের ভূরিভোজ করা সেই রেস্তোরাঁয় অভিযানে পাখির মাংস মিলেছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে রেস্তোরাঁ মালিককে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

আজ রোববার বিকেলে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদা পারভীন এই অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, বিকেল চারটায় হরিপুরবাজারে পাখির মাংস রান্না করে বিক্রি করার অভিযোগে ‘তারু মিয়া হোটেল’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালানো হয়। সেখানে পাখি জবাই করে মাংস সংরক্ষিত করে রাখা ও মাংসের তরকারি পাওয়া যায়। এই রেস্তোরাঁর পাশে নামবিহীন আরও একটি রেস্তোরাঁ তল্লাশি করে ১৫টি পাখির মাংস পাওয়া যায়। দুটি রেস্তোরাঁ পরিচালনায় থাকা দুজন ব্যবসায়ীকে আটক করে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা দিয়ে দুই রেস্তোরাঁমালিক ছাড়া পান।

তারু মিয়ার রেস্তোরাঁয় গত শুক্রবার রাতে সিলেট সিটি করপোরেশনের পাঁচজন কাউন্সিলর ধলাবুক ডাহুক, বক ও বালিহাঁসের মাংস দিয়ে ভূরিভোজ করেন। তাঁদের এই ভোজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ) করা হয়। এ নিয়ে গতকাল শনিবার প্রথম আলোর অনলাইনে ‘পাখির মাংসে পাঁচ কাউন্সিলরের ভূরিভোজ ফেসবুকে লাইভ’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী, কোনো পাখি বা পরিযায়ী পাখি বা মাংস ক্রয়-বিক্রয় অপরাধ এবং এতে ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। এ আইনের তফসিল অনুযায়ী দেশের স্থানীয় বন্য পাখি ধলাবুক ডাহুক, বক ও বালিহাঁস নিষিদ্ধ পাখির অন্তর্ভুক্ত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর বাজার সিলেট-তামাবিল হাইওয়েতে অবস্থিত। এখানের তারু মিয়া হোটেল, পুরোনো ড্রাইভার হোটেল, বিসমিল্লাহ হোটেলসহ বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁয় অবাধে বিক্রি হয় বন্য ও অতিথি পাখি।

অভিযান শেষে জৈন্তাপুরের ইউএনও নাহিদা পারভীন বলেন, পাঁচটি রেস্তোরাঁয় পাখির মাংস বিক্রির অভিযোগে আছে। তবে অভিযানে দুটি রেস্তোরাঁয় পাখির মাংস ও রান্না করা তরকারি পাওয়ায় সতর্ক করে জরিমানা করা হয়েছে। বাকিগুলোতে পাখির মাংস পাওয়া যায়নি। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এ অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান ইউএনও।