পাঁচ বছর ধরে সেতু ভাঙা, দুর্ভোগে ৫ গ্রামের মানুষ

এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি শিশু সাঁকো পার হতে গিয়ে খালে পড়ে গেছে। রোগীকে হাসপাতালে নিতে দুর্ভোগ।

ভাঙা সেতুতে সাঁকো বানিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী। গতকাল সকালে পিরোজপুর সদর উপজেলার খানাকুনিয়ারি গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুর সদর উপজেলার খানাকুনিয়ারি গ্রামের গুদিঘাটা খালের ওপর বাঁশ ও সুপারিগাছ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছে এলাকাবাসী। পাঁচ বছর আগে সেখানে লোহার সেতুটি ভেঙে যায়। নতুন সেতু তৈরি না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পাঁচ গ্রামের মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গুদিঘাটা খালের ওপর ৭০ ফুট দৈর্ঘ্যের লোহার সেতুটি নির্মাণ করে। সাত থেকে আট বছর আগে বালুবাহী কার্গোর ধাক্কায় সেতুটির লোহার খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর কয়েক বছর পর ২০১৬ সালের ২৮ অক্টোবর সেতুর পশ্চিম প্রান্তের একাংশ খালে ভেঙে পড়ে যায়।

গুদিঘাটা খালের পশ্চিম দিকে রয়েছে পোরগোলা, ভোরা, রাজারকাঠি, বাগমারা, পশ্চিম চর কদমতলা গ্রাম। পূর্ব দিকে রয়েছে খানাকুনিয়ারি ফাজিল মাদ্রাসা, খানাকুনিয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কদমতলা জর্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। পশ্চিমের গ্রামগুলোর কয়েক হাজার বাসিন্দাকে জেলা ও উপজেলা সদর, হাসপাতাল ইউনিয়ন পরিষদ, স্কুল–কলেজ ও হাটবাজারে সড়কপথে যেতে গুদিঘাটা খালের ওপর খানাকুনিয়ারি সেতু পার হতে হতো। সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর পাঁচ বছর ধরে সাঁকো পার হয়ে গ্রামবাসীদের চলাচল করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধদের সাঁকো পার হতে কষ্ট হয়।

পোরগোলা গ্রামের বাসিন্দা সাদিকুর ইসলাম বলেন, পাঁচ বছর আগে সেতুটি ভেঙে যায়। এরপর নতুন সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় গ্রামবাসী কত চেষ্টা করল। কিন্তু সেতু নির্মাণ করা হলো না। সেতু না থাকায় গ্রামবাসীকে কষ্ট করে কৃষিপণ্য হাটবাজারে নিতে হচ্ছে। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

খানাকুনিয়ারি পি আর ফাজিল মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তানভীর শেখ বলে, ‘সাঁকো পার হয়ে আমরা মাদ্রাসায় যাই। সাঁকো পর হতে ভয় লাগে। এখানে একটি সেতু হলে ভালো হতো।’

সেতু ভেঙে যাওয়ার পর এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি শিশু সাঁকো পার হতে গিয়ে খালে পড়ে গেছে বলে জানান খানাকুনিয়ারি গ্রামের আবদুস সোবাহান মোল্লা। তিনি বলেন ‘শিশু ও বৃদ্ধরা ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হয়ে চলাচল করছে। দুর্ভোগ লাঘবের জন্য দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।’

কদমতলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ খান বলেন, ‘সেতু ভেঙে যাওয়ার পর উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বিষয়টি তুলেছিলাম। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণ করা হবে। কিন্তু পাঁচ বছরেও সেতু হলো না।’

উপজেলা প্রকৌশলী হরষিৎ সরকার বলেন, খানাকুনিয়ারি গ্রামের গুদিঘাটা ভাঙা সেতুটির জায়গায় নতুন গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হবে। এ জন্য ডিপিপি তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই সেখানে নতুন করে সেতু নির্মাণ করা যাবে।