পাইকগাছায় ২৮ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত

খুলনা জেলার মানচিত্র

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানির চাপে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ২৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের সব কটিরই বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। এতে প্লাবিত হয়েছিল কমপক্ষে ১০টি গ্রাম।

পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, উচ্চ জোয়ার ও ঢেউয়ের চাপে বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। তবে গতকাল শুক্রবার ও আজ শনিবার স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। এখন উপজেলার আর কোথাও নদীর নোনা পানি গ্রামে ঢুকছে না।

গত বুধবার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে ও উপচে ১০টি ইউনিয়ন এবং পৌরসভার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরদিন দুপুরে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলে সোলাদানা, লতা ইউনিয়নসহ পৌর সদরের বিস্তীর্ণ এলাকা নতুনভাবে প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়ে কয়েকটি গ্রামের কয়েক শ পরিবার।

উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, আজ শনিবার স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। এখন উপজেলার আর কোথাও নদীর নোনা পানি গ্রামে ঢুকছে না।

পাইকগাছার বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার নদীর পানি কয়েক ফুট বেশি বৃদ্ধি পায়। এতে লতা ইউনিয়নের কাঠামারী এলাকার বাঁধ ভেঙে ওই এলাকার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জোয়ারের পানি উপচে বোয়ালিয়া সেতু-সংলগ্ন রাড়ুলী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে লবণপানি ঢুকে পড়ে। এ ছাড়া এ ইউনিয়নের মালোপাড়ায় আগের স্থানে নতুনভাবে ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে অসংখ্য ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একইভাবে কপিলমুনি ইউনিয়নের আগড়ঘাটা বাজারসংলগ্ন পদ্মপুকুর এলাকার বাঁধ নতুনভাবে ভেঙে কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়। পৌরসভার শহর রক্ষা বাঁধ উপচে থানার সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরসহ পৌর বাজারের কয়েকটি স্থান পানিতে তলিয়ে যায়। এতে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ে।

পাইকগাছা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ইমরুল কায়েস বলেন, দুই দিনে প্লাবিত হয়ে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৮৬ কিলোমিটার রাস্তা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ এবং ২৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৬০ হেক্টর চিংড়িঘের তলিয়ে গিয়ে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপজেলায় ২ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।