পাওনা টাকা আনতে গেলে হামলা, নিহত ২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুই তরুণ নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের লামাবায়েক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  

নিহত ইশান মিয়া (২০) লামাবায়েক গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে এবং মনির হোসেন (২৫) মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে। নিহত দুজনই চাচাতো ভাই।

হাসপাতালে আসা আহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লামাবায়েক গ্রামের বাদশা বাড়ির আলী আজম ছয় থেকে সাত মাস আগে সৌদিপ্রবাসী মিজানুর রহমানের কাছ থেকে শুঁটকির ব্যবসার জন্য টাকা ধার নিয়েছিলেন। কয়েকবার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেও তিনি দেননি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এরই মধ্যে মিজানুর সৌদি আরবে ফিরে গেছেন। এরপর থেকে তাঁর পরিবারের লোকজন আলী আজমের কাছে পাওনা টাকা চেয়ে যাচ্ছিলেন।

হতাহতদের স্বজনেরা আরও বলেন, কয়েক দিন আগে আলী আজম আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টাকা পরিশোধ করবেন বলে কথা দেন। সে অনুযায়ী মিজানুরের ছেলে ইশান, ভাতিজা মনির হোসেন, তফসির মিয়া সন্ধ্যায় টাকা নিতে আলী আজমের বাড়ি যান। তাঁরা টাকা চাইলে ওই বাড়ির লোকজনকে নিয়ে আলী আজম টেঁটা, বল্লম, ছুরি নিয়ে ওই তিনজনকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেন। এ অবস্থায় মিজানুরের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছালে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।

তাঁদের মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ইশান ও মনিরকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্য দুজন হলেন তফসির ও রিকশাচালক রাসেল মিয়া। সংঘর্ষের সময় রাসেল সেখানে ছিলেন। তফসিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফায়েজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গলায় ধারালো কিছুর আঘাতের কারণে ইশান মারা গেছেন। নিহত মনিরের বুকে টেঁটার সাত থেকে আটটি আঘাতের জখম দেখা গেছে। আহত তফসির বুকের বাঁ পাশে আঘাত পেয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (৭ নম্বর ওয়ার্ড) লোকমান হোসেন এবং নিহত ইশান ও মনিরের চাচা শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে প্রতিপক্ষ আলী আজম ও তাঁর লোকজন মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইশান, মনির ও তফসিরের ওপর হামলা চালান। তাঁদের হামলায় ইশান ও মনির মারা গেছেন। তাঁরা পরিকল্পিতভাবে খুন করেছেন।

একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধরায় আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) রইছ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছি। প্রতিপক্ষের হামলায় একপক্ষের দুজন নিহত হয়েছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’