পাকুন্দিয়া আ.লীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ চলছেই
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ চলছেই। বৃহস্পতিবারও একদিকে বর্তমান সংসদ সদস্য ও পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। অপর দিকে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সোহরাব উদ্দিনের নেতৃত্বে সমাবেশ করে একটি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। একই দিনে বিবদমান দুটি পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশে নেতা–কর্মীদের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।
পাকুন্দিয়া বাজার সদর ঈদগাহ মাঠে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল আওয়ামী লীগের আয়োজনে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরার লক্ষ্যে কর্মিসমাবেশ করে একটি পক্ষ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন পাকুন্দিয়া পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলামও।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নূর মোহাম্মদ দাবি করেন, পাকুন্দিয়ায় মূল ধারার আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মী তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন। এ উপজেলায় তাঁরাই সঠিক আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। অন্যরা আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে দলে অস্থিরতা তৈরি করছেন। তাই স্থানীয় আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার জন্য এবং অবৈধ আওয়ামী লীগারদের প্রতিহত করতে তাঁদের যা করা প্রয়োজন, তাই করবেন বলে সমাবেশে ঘোষণা দেন।
এদিন বিকেল চারটার দিকে একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আইনজীবী সোহরাব উদ্দিনের নেতৃত্বে পাকুন্দিয়া চরফরাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় সোহরাব তাঁর দলবল ও অনুসারী নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিছিল সহকারে চরফরাদী ইউনিয়নের আলসা বাজারে সমাবেশে উপস্থিত হন। তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন এবং ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের কমিটির ঘোষণা দেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি ফরিদ উদ্দিনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সোহরাব উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনায় জেলা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে তাঁদের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কেন্দ্রের নির্দেশে ইতিমধ্যে তাঁরা কয়েকটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছেন। দু-তিনটি ইউনিয়ন রয়েছে, সেগুলোর ওয়ার্ড কমিটিও অল্প দিনের মধ্যে শেষ করে ফেলা হবে। অথচ বৈধ এ কমিটিকে আরেকটি পক্ষ অবৈধ আখ্যা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করছে। এসব বাধা উপেক্ষা করেই তৃণমূল আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা। যতই বাধা ও ষড়যন্ত্র করা হোক, কেউ রুখতে পারবে না। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত সময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সব ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষ করা হবে।
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সোহরাব উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে উপজেলায় ৬৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে জেলা আওয়ামী লীগ। এর পর থেকে কমিটি বাতিলের দাবিতে নূর মোহাম্মদের পক্ষের লোকজন দফায় দফায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছে। এ নিয়ে কয়েকবার উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, মারামারি, সহিংসতাসহ গাড়ি পোড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিল্লুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কিছু করার নেই। কেউ জেলাকে জানিয়ে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকে না। তৃণমূল আওয়ামী লীগে এসব ব্যতিক্রম কিছু নয়।