পাগলা হাতির পাগলামি থামছে না

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উন্মত্ত হয়ে ওঠা পোষা হাতি ‘শের বাহাদুরের’ আক্রমণে স্থানীয় একটি বাঁশমহালের দুজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ সময় হাতিটি একটি ট্রাকে ভাঙচুর চালায়। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার গাজীপুর-সাগরনাল সড়কের আদাআদির মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শের বাহাদুর কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলার সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত হাড়ারগজ সংরক্ষিত বনে থাকে। বয়স ৪০ বছর। হাতিটির মালিক কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল মালেক। ১৩ অক্টোবর এটি কুলাউড়ার মেরিনা চা-বাগানে ঢুকে চায়ের চারাগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির বেশ কিছু গাছ তছনছ করে। এ সময় শ্রমিকদের দেখে ধাওয়াও করে। তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কাজে যাচ্ছেন না।

মেরিনা চা-বাগানের পাশের গোগালীছড়া বাঁশমহাল বন বিভাগ ইজারা দিয়েছে। সেখানে কিছুদিন ধরে বাঁশ কাটা চলছে। আজ দুপুরে একটি ট্রাকে করে ২০-২৫ জন শ্রমিক গাজীপুর-সাগরনাল সড়ক দিয়ে বাঁশমহালে বাঁশ আনতে যাচ্ছিলেন। তাঁরা বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আদাআদির মাজারের কাছে পৌঁছালে হঠাৎ করে হাতিটি ছুটে গিয়ে গাড়ির পথরোধ করে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে দৌড়ে পালানোর সময় হাতির ধাক্কায় রফিকুল ইসলাম (৪০) ও আনোয়ার মিয়া (৪৫) নামের দুই শ্রমিক আহত হন। তাদের বাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলায়। পরে গাড়ির চালকসহ সবাই পাশের একটি বাড়িতে ঢুকে আশ্রয় নেন। হাতিটি ট্রাকের সামনের কিছু অংশে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে হাতির মালিক, মাহুত ও বন বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জের ফরেস্টার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, হাতির তাণ্ডবের কারণে আপাতত গাজীপুর-সাগরনাল সড়ক দিয়ে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল না করতে বলা হয়েছে। ওই সড়কের পরিবর্তে বিকল্প হিসেবে কুলাউড়া-জুড়ী সড়ক ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে। হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এটির মালিকসহ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আগেই বলা হয়েছে। চার দিন ধরে চেষ্টা চালিয়েও মালিক হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। ২০১৭ সালে এ ধরনের একটি হাতির আক্রমণে দুজনের প্রাণহানি ঘটেছিল।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ট্রাংকুলাইজার’ নামের এক ধরনের চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। কিন্তু এটি তাদের কাছে নেই। ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত চিড়িয়াখানার কিউরেটরের কাছে এটি পাওয়া যায়। সেখান থেকে ইনজেকশন আনতে হাতিটির মালিককে বলা হয়েছিল। পরে কী করেছেন, তা জানা যায়নি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে হাতির মালিক আবদুল মালেকের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এর আগে হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছিলেন।