পাটকল চালু না করলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু ও আধুনিকায়নের দাবিতে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ পদযাত্রা করে। বিআইডিসি সড়ক, খালিশপুর, খুলনা, ১৭ আগস্ট।
ছবি: সাদ্দাম হোসেন

বন্ধ পাটকলগুলো দ্রুত চালু করা না হলে কঠোর কর্মসূচি পালনের হুমকি দিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, সরকার করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করে দিয়ে অমানবিক কাজ করেছে। পাটকলের লোকসানের জন্য শ্রমিকেরা দায়ী নন। অথচ মিল বন্ধ করে শ্রমিকদের কর্মহীন করা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে খুলনার খালিশপুর জুট মিলের সামনে এক সমাবেশে ওই আন্দোলনের হুমকি দেন জোনায়েদ সাকি। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালুর দাবিতে খালিশপুর জুট মিল থেকে দৌলতপুর জুট মিল পর্যন্ত পদযাত্রার আগে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ ওই কর্মসূচির আয়োজন করে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক নাগরিক নেতা কুদরত-ই-খুদা। এ সময় বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্যসচিব সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা এস এ রশীদ, খুলনা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক আ ফ ম মহসীন, নাগরিক নেতা মোজাম্মেল হক, জনার্দন দত্ত, মো. বাবুল হাওলাদার, আনিসুর রহমান প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্ববাজারে যখন পাটের চাহিদা বাড়ছে, বেসরকারি মিলগুলো যখন লাভবান হচ্ছে, ঠিক সেই সময় রাষ্ট্রীয় মিলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) পাটকল চালানোর সিদ্ধান্ত খুবই উদ্বেগের বিষয়। রাষ্ট্রীয় মিলগুলো বেসরকারীকরণ করার আগে মিলগুলোর কেন লোকসান হচ্ছে, তার কারণ চিহ্নিত করা প্রয়োজন। মাথাব্যথা মানেই মাথা কেটে ফেলা নয়, বরং তার চিকিৎসা করা।

বক্তারা আরও বলেন, পাটশিল্পে কেন লোকসান হচ্ছে, তার কারণ বিশ্লেষণ করা হয়নি। শ্রমিক–কর্মচারীদের সংগঠন স্কপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া এক প্রতিবেদন ও প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে, মিলগুলোর লোকসান হওয়ার মূল কারণ কর্মকর্তাদের অনিয়ম, মাথাভারী প্রশাসন, দুর্নীতি ও পরিকল্পনাহীনতা। বিজেএমসির লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের কারণে ওই সব মিল সময়মতো পাট কিনতে পারে না। যখন পাট কেনে, তখন পাটের মৌসুম শেষ হয়ে যায়। বেসরকারি পাটকলগুলো তার আগেই ভালো পাট কিনে নেয়।

বক্তারা বলেন, পাটশিল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতি চিহ্নিত করে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি মিলকে নতুন একটি ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। মিলগুলো বন্ধ করতে সরকারের পাঁচ হাজার কোটি টাকা বাজেট ধার্য না করে স্কপের প্রস্তাব অনুযায়ী ১ হাজার ২০০ কোটি টাকায় আধুনিকীকরণ সম্ভব। এ ছাড়া মিলের পুরোনো মেশিনপত্র বিক্রি করে আরও ৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। পাটশিল্প রক্ষা শুধু শ্রমিকদের বেঁচে থাকার জন্য নয়, এর সঙ্গে জাতীয় স্বার্থও জড়িত। তাই অবিলম্বে মিলগুলো চালু করার আহ্বান জানান তাঁরা।