পাটগ্রামে বোনকে উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করায় ভাইকে ছুরিকাঘাত

পাটগ্রামে এক তরুণীকে (২০) উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করায় তাঁর বড় ভাইকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে
প্রতীকী ছবি

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে এক তরুণীকে (২০) উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করায় তাঁর বড় ভাইকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হামলাকারী ও উত্ত্যক্তকারী মো. রিফাতকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গতকালই মেয়েটি বাদী হয়ে রিফাতের বিরুদ্ধে পাটগ্রাম থানায় মামলা করেন। রাতেই রিফাতকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে।

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তার রিফাতকে আজ মঙ্গলবার বিকেলে লালমনিরহাট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আহত ব্যক্তির নাম জাহিদ হাসান (৩৪)। তাঁকে উন্নত চিকিসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পরিবার, পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণীকে দীর্ঘদিন ধরে রিফাতের উত্ত্যক্ত করে আসছেন। চার বছর আগে রিফাত তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হননি। এরপর রিফাত উত্ত্যক্তের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। বাড়ি থেকে কলেজ যাওয়া-আসার পথে অপহরণ করার ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ায় একপর্যায়ে ওই তরুণী কলেজের অধ্যক্ষের কাছে বিচার দেন। এতে রিফাত আরও খেপে যান। পরে মেয়েটি কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এরপর রিফাত তাঁর বাড়ির আশপাশ ঘোরাফেরা শুরু করে উত্ত্যক্তের চেষ্টা চালান। পরে মেয়েটি বাধ্য হয়ে তাঁর বড় ভাই জাহিদ হাসানকে বিষয়টি জানান। ঘটনাটি জেনে ভাই জাহিদ রিফাতকে তাঁদের বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে নিষেধ করেন। এরপরও রিফাত তাঁকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।

বাড়ি থেকে কলেজ যাওয়া-আসার পথে অপহরণ করার ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ায় একপর্যায়ে ওই তরুণী কলেজের অধ্যক্ষের কাছে বিচার দেন। এতে রিফাত আরও খেপে যান।

পরে অত্যাচার সহ্য করতে না পেয়ে পরিবারের সিদ্ধান্তে মেয়েটি রংপুরের একটি কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। দেড় মাস আগে রংপুর থেকে বাড়িতে আসে মেয়েটি। এ খবর পেয়ে রিফাত আবারও মেয়েটির বাড়ির আশপাশ ঘোরাফেরা শুরু করেন। সোমবার দুপুরের দিকে মেয়েটিকে পথে একা পেয়ে তাঁকে আটকে শ্লীলতাহানিসহ যৌন হয়রানির চেষ্টা চালান। পরে মেয়েটি সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে বড় ভাই জাহিদকে মুঠোফোনে খবর দেন। খবর পেয়ে জাহিদ বোনকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান এবং রিফাতকে শাসান।

এ ঘটনার জের ধরে রিফাত ক্ষিপ্ত হয়ে পরে জাহিদদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন ও জাহিদকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে মা জামিলা বেগম এগিয়ে এলে তাঁকেও মারধর করে আহত করেন রিফাত। পরে স্থানীয় লোকজন জাহিদ ও তাঁর মাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নেন। পরে চিকিৎসক আহত জাহিদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।