পাটুরিয়ায় যাত্রীদের চাপে দুপুর থেকে ফেরি ছাড়ছে

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ফেরিতে গাদাগাদি করে যাত্রীরা নদী পার হচ্ছেন। শনিবার দুপুরে পাটুরিয়ার তিন নম্বর ঘাট এলাকায়
প্রথম আলো

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে আজ শনিবার দুপুর থেকে সীমিত পরিসরে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপে বেলা একটার পর থেকে ছয়টি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার শুরু হয়।

ফেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ সকাল থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হলেও পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। যাত্রীদের ভোগান্তি ও বাস্তবতা বিবেচনায় দুপুরে সীমিত পরিসরে ফেরি চলাচল শুরু করা হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী চলমান লকডাউনের শুরু থেকে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার করা হচ্ছিল। এরপর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ সকাল ছয়টা থেকে পুরোপুরি ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে ঈদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো যাত্রী সকাল থেকে ঘাট এলাকায় ভিড় করেন। এ ছাড়া প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ ছোট গাড়িরও চাপ পড়ে পাটুরিয়ায়। পরে যাত্রীদের ভোগান্তি বিবেচনা করে এবং তাঁদের রোষানলে বাধ্য হয়ে ফেরি চলাচল শুরু হয়।

আজ সরেজমিনে পাটুরিয়া ঘাটে দেখা গেছে, সকাল নয়টার দিকে পাটুরিয়া ২ নম্বর ঘাটে একটি লাশবাহী, তিনটি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ব্যক্তিগত গাড়িসহ অসংখ্য যাত্রীকে নদী পারাপারের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। এ সময় ওই সব অ্যাম্বুলেন্স পারাপারের জন্য মাধবীলতা নামের একটি ছোট ফেরি পন্টুনের কাছে গেলে অসংখ্য যাত্রী পন্টুনে ভিড় করে। পরে বাধ্য হয়ে ফেরিটি আর পন্টুনে ভেড়েনি। এ সময় ৩ নম্বর ঘাটে শাহ আলী নামের একটি বড় ফেরি পন্টুনে আনা হয়। এ সময় ওই সব যাত্রী এই ফেরিতে উঠে পড়ে। এরপর মাধবীলতা ফেরিটি দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ও কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপার করা হয়।

দীর্ঘ প্রায় দুই ঘণ্টা শাহ আলী ফেরিতে উঠে যাত্রীরা নদী পারাপারের অপেক্ষায় থাকে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা যাত্রীদের ফেরি থেকে নামার অনুরোধ করলেও তারা শোনেনি। একপর্যায়ে ফেরি চালু না করায় যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এরপর দুপুর ১২টার দিকে ফেরিটি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হয়। এরপর থেকে ছয়টি ফেরি দিয়ে সীমিতভাবে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, এই নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষ। নারী ও শিশু যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হয়। ব্যবহার উপযোগী শৌচাগার না থাকা এবং খাবার হোটেল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে তোলে। আজ সকাল থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা পাটুরিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় ভিড় করেন।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান বেলা তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এই মুহূর্তে ঘাটে যাত্রীদের ও যানবাহনের চাপ কিছুটা কমেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী সকাল থেকে ফেরি বন্ধ রাখা হয়। তবে বেলা একটা থেকে জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স পারাপারের জন্য সীমিতভাবে ফেরি চলাচল শুরু করা হয়।