পাবজি খেলা নিয়ে কিশোরকে হত্যার অভিযোগ, অপর কিশোরের বাড়ি ঘেরাও

অভিযুক্ত কিশোরের বাড়ি ঘেরাও করেন নিহতের স্বজনসহ গ্রামের বাসিন্দারা। শনিবার দুপুরের মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের দক্ষিণ সাহরাইল গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

পাবজি খেলা নিয়ে দুই কিশোরের মধ্যে ঝগড়ার পর একজন অপরজনকে মারধর করেছে। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে এমন অভিযোগ ওঠার এক দিন পর আজ শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুরুতর আহত ওই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর অপর কিশোরের বাড়ি ঘেরাও করেন নিহতের স্বজন ও গ্রামের কিছু বাসিন্দা। তাঁরা ওই কিশোরকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাধা দিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ ওই কিশোরসহ তার দুই স্বজনকে আটক করেছে।

দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ সাহরাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দুই কিশোরের বাড়ি এই গ্রামে। নিহত কিশোরের নাম মো. রাজু (১৪)। সে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল।

রাজুর অভিভাবকদের অভিযোগের বরাত দিয়ে পুলিশ এবং স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, সম্প্রতি মুঠোফোনে পাবজি গেম খেলা নিয়ে রাজু ও অপর কিশোরের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জেরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কৌশলে রাজুকে সাইকেলে করে গ্রামের পাশে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের রুপারচর এলাকায় নিয়ে যায় অপর কিশোর।

ওই দিন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে রাজুকে না পেয়ে স্বজনেরা অপর কিশোরের বাড়িতে যান। এরপরও রাজুর সন্ধান না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে রুপারচর এলাকায় ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথে গুরুতর আহত রাজুকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান কয়েকজন। তাঁরা রাজুকে প্রথমে স্থানীয় সাহরাইল ইব্রাহিম মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে পরে রাজুকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে মারা যায় রাজু।

মৃত্যুর খবর পেয়ে রাজুর স্বজন ও শতাধিক গ্রামবাসী দুপুর ১২টার দিকে অপর কিশোরের বাড়ি ঘেরাও করেন। তাঁরা কিশোরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যেতে চান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিঙ্গাইর সার্কেল) রেজাউল হক, সিঙ্গাইর থানার ওসি সফিকুল ইসলাম মোল্লাসহ পুলিশ সদস্যরা।

তাঁরা বাধা দিলে উত্তেজিত গ্রামবাসীর নিক্ষেপ করা ইটপাটকেলের আঘাতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোর ও তার দুই স্বজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।