পাহাড়ধসের শঙ্কায় বন্ধ হলো ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়ক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট–বায়েজিদ সংযোগ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে সিডিএ। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বেঙ্গল ব্রিজ এলাকায়
ছবি: কৃষ্ণ চন্দ্র দাস

পাহাড়ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী-সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট সংযোগ সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সড়কটি বন্ধ করে দেয় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এর আগে গত সোমবার সড়কটি বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর চার লেনের সড়কটির সীতাকুণ্ডমুখী লেন বন্ধ করে দেয় সিডিএ।

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামীমুখী অপর লেনটিও বন্ধ করে দেয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস। ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কের দুই দিকে প্রতিবন্ধকতা তৈরির জন্য সারি সারি ব্লক বসিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফৌজদারহাট অংশে রেলরোড ওভার ব্রিজের মুখে ব্লক দিয়ে বন্ধ করে দেয় সিডিএ। সেখানে সড়কটি বন্ধের একটি সাইনবোর্ড দেওয়া হয়। এর আধা কিলোমিটার ভেতরে বেঙ্গল ব্রিকসের গেট এলাকায় ব্লক দিয়ে চার লেনের উভয় দিকে বন্ধের আরেকটি প্রতিবন্ধকতা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বায়েজিদ অংশে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনসংলগ্ন আরেকটি ব্লক প্রতিবন্ধকতা দেওয়া হয়। সীতাকুণ্ডমুখী লেনে অন্তত পাঁচ স্থানে এবং বায়েজিদমুখী লেনে দুই স্থানে পাহাড়ের ধস দেখা দেওয়ায় লাল পতাকা দিয়ে সতর্কতা সংকেত দেখানো হয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সড়কটি বন্ধের কারণে এই অঞ্চলের মানুষকে যাতায়াতের দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৫টি পাহাড় কেটে সড়কটি নির্মাণ করেছে সিডিএ। এসব পাহাড়ের অনেকগুলো কাটা হয়েছে খাড়াভাবে। ফলে ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। এসব পাহাড় কাটার দায়ে সিডিএকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। পাহাড়গুলো খাড়াভাবে কাটার কারণে কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে কয়েকটি পাহাড় আংশিক ধসে পড়ায় সড়কের একটি অংশের এক পাশ বন্ধ করে রাখে সিডিএ। এবার পুরোপুরি বন্ধ করা হলো।

উত্তর চট্টগ্রাম, দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য জেলাগুলো থেকে আসা ঢাকামুখী যানবাহনগুলো চট্টগ্রাম শহরের বাইরের এই সড়ক ব্যবহার করে থাকে। এ ছাড়া বিমানবন্দরগামী যানবাহনগুলোও সড়কটি ব্যবহার করে। এতে গাড়িগুলো যানজটে পড়ে না বিধায় সময় অনেক বেঁচে যায়। সড়কটি বন্ধের ফলে এসব অঞ্চলের যানবাহনকে শহরের ভেতরের বিভিন্ন সড়ক ব্যবহার করতে হবে। এতে সময়ও বেশি লাগতে পারে।

সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস প্রথম আলোকে বলেন, সড়কটির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। উদ্বোধনের আগেই চট্টগ্রাম নগরের যানজট নিরসনে বৃহত্তর স্বার্থে সড়কটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সড়কে থাকা ৩-৪টি পাহাড় অতিবর্ষণে ধসে পড়তে পারে। ফলে সিডিএ বিশেষজ্ঞ দল পাহাড়গুলোকে স্থির করার জন্য আরও কিছু কাটার পরামর্শ দিয়েছে। কী পরিমাণ কাটতে হবে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ তারা পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানাবে। এ ছাড়া কিছু পাহাড় এলাকায় রিটেনিং ওয়াল দিতে হবে। ফলে অসম্পন্ন কাজগুলো করার জন্য সড়কটি আজ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের দিকে সড়কটি যান চলাচলের জন্য আবারও উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।