পাহাড়ে বিভিন্ন সংগঠন সৃষ্টি করে দিচ্ছে শাসকগোষ্ঠী: সন্তু লারমা

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমাসহ অতিথিরা। রাঙামাটি শহরের কুমার সমিত রায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে শুক্রবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা বলেছেন, পার্বত্য চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন না করে সরকার উল্টো চুক্তি স্মরণ না করার ষড়যন্ত্র করছে। পাহাড়ে বিভিন্ন সংগঠন সৃষ্টি করে দিচ্ছে শাসকগোষ্ঠী। সেই সংগঠনগুলোকে পার্বত্য চুক্তি যাতে মানুষ স্মরণ করতে না পারে, সেই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

আজ শুক্রবার রাঙামাটিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ২৬তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

পার্বত্য চুক্তি সই করা সংগঠন জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) চিরতরে বিলুপ্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে সন্তু লারমা আরও বলেন, পার্বত্য চুক্তি সইয়ের ২৫ বছর হতে চলেছে। মৌলিক বিষয়গুলো এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। পাহাড়ের মানুষ এখন কঠিন বাস্তবতার মধ্যে বাস করছে। যাদের মুখ আছে কিন্তু কিছু বলতে পারে না, চোখ আছে কিন্তু দেখতে পায় না। কান থাকলেও শুনতে পায় না। এখনো জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব বিলুপ্তির ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে সরকার। চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করে এমন একপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, পাহাড়ের জুম্ম জনগণ যে চুক্তি সই করেছে, সেটি যেন ভুলে যায়। সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন করবে নাকি করবে না, তা ঘোষণার দাবি জানান তিনি।

সকাল ১০টায় রাঙামাটি শহরের জিমনেসিয়াম মাঠে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন মারমা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন, শিক্ষাবিদ মংসানু চৌধুরী, লেখক ও সাংবাদিক মো. নজরুল কবির, সাবেক শিক্ষক শিশির চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক টনিস ম্যাথিউ চিরান, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মো. ফয়েজ উল্লাহ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সহসভাপতি রায়হান উদ্দিন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জগদীশ চাকমা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন করে সাধারণ মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। বক্তারা শাসকগোষ্ঠীর দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ও চুক্তি বাস্তবায়নে আগামী দিনে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।