পাড়াগাঁয়ের পিঠা মেলা
মেলায় পিঠার স্টল নিয়ে বসেছেন ষাটোর্ধ্ব গৃহবধূ জাহানারা বেগম। স্টলের পাশেই চুলা জ্বালিয়ে ভাপা পিঠা তৈরি করছিলেন তিনি। একইভাবে পিঠার স্টল নিয়ে বসেছে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মেঘা আক্তার। তার সঙ্গে এসেছেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা সবাই মেঘাকে সাহায্য করছেন। নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীগ্রামের একটি আমবাগানে গতকাল শনিবার এই পিঠা মেলার আয়োজন করে শাহ কৃষিতথ্য পাঠাগার ও জাদুঘর।
মেলার উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. মনজুর হোসেন ও মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু বক্কার সিদ্দিক।
শাহ কৃষিতথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, পিঠা খেয়ে স্টলের একটি বাঁশের গ্লাসে পানি পান করছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক নাদিয়া মনজুর। তাঁকে মাটির তৈরি বদনাসরাই থেকে পানি ঢেলে দিচ্ছেন শাহ কৃষিতথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা জাহাঙ্গীর শাহ। এই স্টলের বিশেষত্ব হচ্ছে, সবকিছু গ্রামীণ তৈজস দিয়ে সাজানো।
মেলায় সবচেয়ে বেশি ভিড় লেগে ছিল শাহবাড়ি ফুড কর্নারের সামনে। তাদের ছিল ৫৫ পদের পিঠা। তারা গ্রামীণ পিঠার পাশাপাশি এনেছে ঢাকার বাখরখানি, নারকেলপুরি, বিবিখানা, খিরের হালুয়া, বিটরুটের হালুয়াসহ আরও অনেক কিছু।
মেলায় ১৪টি স্টল ছিল। যে যা তৈরি করতে পারেন, তা–ই নিয়ে এসেছেন। বৃদ্ধ আবুল কাশেম তাঁর পুত্রবধূ সীমা বেগম, নাতনি জেমি ও লামিয়াকে নিয়ে এসেছেন। সবাইকে মেলার পাঁপড় কিনে দিলেন। তিনি বলেন, ‘আজ এই গাঁয়ের মানুষের কোনো কাম নাই। সবাই মেলায় আসিচ্ছে। হামিও নাতি ও ছেলের বউকে নিয়ে আইসছি।’
উদ্বোধনের সময় মান্দার ইউএনও মো. আবু বক্কার সিদ্দিক বলেন, প্রয়োজনে এই সুন্দর আয়োজনের জন্য তিনি যেকোনো সহযোগিতা দেবেন।
শাহ কৃষিতথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা জাহাঙ্গীর শাহ বললেন, গ্রামের মানুষের বিনোদনের কোনো সুযোগ নেই। এক দিন নির্মল একটু আনন্দের জন্য তিনি এই মেলার উদ্যোগ নিয়েছেন। দুই বছর থেকে এটা চলছে। আনন্দের সঙ্গে গ্রামের মানুষের অর্থনীতিতেও কিছু যোগ হচ্ছে।