পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানোর বিকল্প উদ্যোগ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমাণ পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র
ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি আগামীকাল সোমবার উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। উপজেলার কয়েকটি প্রান্ত থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার ব্যবস্থা করেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)।

কলাপাড়া পৌর শহরের শহীদ শেখ কামাল অডিটরিয়াম, কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্রের বিচ হ্যাভেন হোটেলের সম্মেলনকক্ষ ও ধানখালীর মাছুয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রজেক্টর বসানো হয়েছে। সর্বস্তরের মানুষকে সেখানে গিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ মো. মহিব্বুর রহমানের পক্ষে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে এ অনুরোধ জানিয়েছেন।

উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল কলাপাড়ায় যাবেন। সঙ্গে তাঁর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জি মিংসহ মন্ত্রী ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন আসনের সাংসদ উপস্থিত থাকবেন।

সাংসদ মো. মহিব্বুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে নির্ধারিত লোকজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে চান। তিনি কী বলেন, তা শুনতে চান। সবাই যেহেতু অনুষ্ঠানস্থলে যেতে পারছেন না, সে জন্য প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কলাপাড়ায় পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বােধন উপলক্ষে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরের সড়কগুলো সজ্জিত করা হয়েছে।
ছবি: প্রথম আলো

প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। একই বছরের ২৬ আগস্ট দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। পর্যায়ক্রমে উৎপাদন বাড়তে থাকে। দুটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পুরোপুরি সক্ষমতা অর্জন করলে ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বাণিজ্যিকভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে কমার্শিয়াল অপারেশন ডেট (সিওডি) ঘোষণা করে। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য ১ হাজার ২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পাশেই ১৬ একর জমিতে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ নামে একটি আবাসিক পল্লি নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।

জানা গেছে, পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অধিগ্রহণ করা জমিতে আরও একটি ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। এর বাইরে ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের এলএনজিভিত্তিক, ১০০ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ এবং ৫০ মেগাওয়াটের বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বােধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের জন্য প্যান্ডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির উদ্বোধন করবেন। সম্প্রতি কলাপাড়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে
ছবি: প্রথম আলো

বিসিপিসিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এম খোরশেদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের শুধু উদ্বোধন নয়, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে এদিন প্রধানমন্ত্রী দেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণাও দেবেন, যা দেশের ইতিহাসে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে জানান তিনি।