পিচ-খোয়া উঠে বড় বড় গর্ত, দুর্ভোগ

সংস্কার না করায় শেরপুর জেলা শহরের তিনআনী বাজার-বাগরাকসা-গৌরীপুর সড়কের পিচঢালাই উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার শহরের গৌরীপুর এলাকায়।
ছবি: প্রথম আলো

দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে শেরপুর জেলা শহরের তিনআনী বাজার-বাগরাকসা-গৌরীপুর সড়কের পিচ ও খোয়া উঠে গেছে। অনেক স্থানে তৈরি হয়েছে গর্ত। চলতি বর্ষায় এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে থাকছে। এসব গর্তে যানবাহন পড়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।
পৌরবাসী বলছেন, সড়কটি প্রায় তিন বছর আগে সর্বশেষ সংস্কার করা হয়। এরপর আর কাজ করা হয়নি। তাঁরা দুই পাশে নালা নির্মাণসহ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

বাগরাকসা এলাকার বাসিন্দা মো. শাহজাহান বলেন, এক থেকে দুই ঘণ্টা ভারী বৃষ্টি হলে এ সড়কে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তখন এলাকাবাসীর দুর্ভোগের সীমা থাকে না। সড়কটির দুই পাশে পাকা নালা নির্মাণ ও এটি উঁচু করে দিতে হবে।

পৌরসভা ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, সড়কটি জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ তিনআনী বাজার কলেজ মোড় থেকে শুরু হয়ে বাগরাকসা কাজীবাড়ি হয়ে গৌরীপুর পৌর বাস টার্মিনালে গিয়ে শেষ হয়েছে। এটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার, প্রস্থ ছয় মিটার। আন্তজেলা সড়ক যোগাযোগ ও এলাকাবাসীর চলাচলের ক্ষেত্রে সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়কে প্রতিদিন তিন হাজারের বেশি হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। এটির দুই পাশে শেরপুর সরকারি কলেজ, শেরপুর উচ্চবিদ্যালয়, জেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয়, কয়েকটি কোচিং সেন্টার, ঐতিহ্যবাহী মাইসাহেবা ও বাগরাকসা মসজিদ, কাজীবাড়ি ঈদগাহসহ তিন শতাধিক শিল্প ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং কয়েক শ বাসাবাড়ি রয়েছে।

এ এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ বাস করে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির উন্নয়ন বা সংস্কার কাজ না হওয়ায় এলাকাবাসী ও পথচারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এরপরও তারা বাধ্য হয়ে সড়কটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।

বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তাটির প্রয়োজনীয় মেরামতের কাজ করে দেওয়া হবে।
মো. আতিউর রহমান, ভারপ্রাপ্ত মেয়র, শেরপুর পৌরসভা

এ সড়কের অটোরিকশাচালক মিস্কিন মিয়া বলেন, এ সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালাতে হয়। ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে মাঝেমধ্যেই রিকশা ও হালকা যান উল্টে পড়ে। লোকজন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত হন।

গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির বেশির ভাগ স্থানে পিচ উঠে ইট-সুরকি বের হয়ে গেছে। তৈরি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। এসব গর্তে পানি জমে আছে। কোনো স্থানে দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে সড়কটি দেবে গেছে। শেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবন-সংলগ্ন ফটকের সামনের নালাটি ময়লা–আবর্জনা ও বর্জ্যে ভরে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙাচোরা এ সড়ক দিয়ে পথচারী ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
এ সময় শেরপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আইরিন পারভীন বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের গর্তগুলো পানিতে ডুবে যায়। তখন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। পানিতে কাপড় ভিজিয়ে যাতায়াত করতে হয়।

গৌরীপুর এলাকার ব্যবসায়ী আবুল হাসেম বলেন, ভাঙাচোরার কারণে এ রাস্তায় যাতায়াতে রিকশাভাড়া বেশি দিতে হয়।

জানতে চাইলে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. আতিউর রহমান বলেন, বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তাটির প্রয়োজনীয় মেরামতের কাজ করে দেওয়া হবে। পরে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে এটির সংস্কার ও উন্নয়ন করা হবে।