পিলার নির্মাণ শেষের পথে, চালু হবে ২০২২ সালে

কচা নদীতে চলছে অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের কাজ। এরই মধ্যে নির্মিত হয়েছে পিলার। সম্প্রতি পিরোজপুরের বেকুটিয়া পয়েন্টেপ্রথম আলো

পিরোজপুরে কচা নদীর ওপর বেকুটিয়া পয়েন্টে অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে সেতুর ৮টি পিলার স্থাপনসহ ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

২০২২ সালের মধ্যে কাজের শতভাগ শেষ হওয়ার আশা করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সেতুটি নির্মিত হলে বরিশালের সঙ্গে খুলনায় সড়কপথে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা চালু হবে।

পিরোজপুর শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে বেকুটিয়া ফেরিঘাটের কাছে সেতুটি নির্মিত হচ্ছে। ৯৯৮ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ১৩ দশমিক ৪০ মিটার প্রস্থের সেতুতে ৯টি স্প্যান ও ১০টি পিলার স্থাপন করা হবে।

উদ্বোধনের সময় প্রকাশিত ‘৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ শিরোনামের স্মারক বই থেকে জানা যায়, একটি টোল প্লাজা, সেতুর দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক, পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি ১২ মিটার সেতু ও বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। সেতুটি নদীর তলদেশ থেকে ২৮ দশমিক ৯৮ মিটার উঁচু হবে। ৮২১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে চায়না রেলওয়ে-১৭ ব্যুরো গ্রুপ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করছে। মোট বরাদ্দের ৬৫৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা চীন সরকার ও ১৬৭ কোটি ৪ লাখ টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার।

সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা তৈরির জন্য চীন সরকারের অনুদানে সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।

এই সেতু নির্মিত হলে আশপাশে বাণিজ্যের পরিধি বাড়বে। আর শিল্পকারখানা নির্মিত হলে স্থানীয় লোকজন সেখানে কাজ করতে পারবেন।
আজমির হোসেন, বেকুটিয়া ফেরিঘাটের ইজারাদার

সম্প্রতি সেতু নির্মাণ এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, চীন ও দেশের শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। কচা নদীর মধ্যে আটটি পিলার এরই মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। এখন সেতুর দুই প্রান্তের দুটি পিলার নির্মাণের কাজ চলছে।

বেকুটিয়া ফেরিঘাটের আশপাশে বসবাসকারী কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কচা নদীর প্রশস্ততা এক কিলোমিটার হওয়ায় ফেরি পারাপারে প্রায় ৪৫ মিনিট লেগে যায়। বর্ষাকালে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি ও স্রোত বেড়ে গেলে আরও বেশি সময় লেগে যায়। এ ছাড়া ফেরিগুলো পুরোনো ও জরাজীর্ণ হওয়ায় প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে। বৈরী আবহাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে।

বেকুটিয়া ফেরিঘাটের ইজারাদার আজমির হোসেন বলেন, পিরোজপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এই সেতু। এটি নির্মিত হলে আশপাশে বাণিজ্যের পরিধি বাড়বে। আর শিল্পকারখানা নির্মিত হলে স্থানীয় লোকজন সেখানে কাজ করতে পারবেন।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহামুদ বলেন, আশা করা যাচ্ছে, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হবে। এরপর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।