পুকুর ভরাটে সরকারি প্রতিষ্ঠান

সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বাসভবন নির্মাণের জন্য ১২ দিন ধরে পুকুরটি ভরাট চলছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।

সওজ বিভাগের উদ্যোগে চলছে পুকুর ভরাট। শনিবার কুমিল্লা নগরের ধর্মসাগর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লা নগরের ধর্মসাগরের পশ্চিম পাড়ের বহু পুরোনো একটি পুকুর ভরাট করে ফেলছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বাসভবন নির্মাণের জন্য ১২ দিন ধরে পুকুরটি ভরাট চলছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।

জানতে চাইলে কুমিল্লা সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি একটি পরিত্যক্ত পুকুর। যেকোনো সময়ে বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সওজ সেটি ভরাট করছে। এখানে একটি বাসগৃহ করা হবে। পরিকল্পিতভাবে আমরা সেটি ভরাট করছি।’

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে ধর্মসাগর। ঐতিহ্যবাহী পুকুরটির পশ্চিম পাড়ে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সড়কের পাশে সওজের জায়গা রয়েছে। বিস্তৃত ওই জায়গায় রয়েছে পুকুর এবং আম, কাঁঠাল, বরই ও নারকেলগাছ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া ওই জমিতে গত ২৩ মার্চ ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে ওই স্থানে থাকা কিছু গাছগাছালি কাটা হয়। ২৪ মার্চ থেকে ট্রাকে করে বালু এনে স্তূপ করে রাখা শুরু হয়। ভেকু মেশিন (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে ওই বালু পুকুরে ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। ওই পুকুরের কাছেই অবস্থিত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নগর ভবন।

স্থানীয় বাসিন্দা নাছির উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকারি দপ্তর হওয়া সত্ত্বেও সওজ নিজেই সরকারি আদেশ লঙ্ঘন করছে। পুকুরটি ভরাট হলে এলাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে।

১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনজুর কাদের বলেন, ‘সওজ এটা করতে পারে না। এটি বহু পুরোনো পুকুর। আমি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত। তাই স্পটে যেতে পারছি না। তবে পুকুরটি ভরাট বন্ধের জন্য শিগগিরই সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, কুমিল্লা হচ্ছে দিঘি ও পুকুরের শহর। দিনে দিনে সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে বহু পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। সরকারি দপ্তরই যদি এভাবে বেআইনি কাজ করে, তবে তা মেনে নেওয়া কঠিন।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই পুকুর ভরাট করা যাবে না। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’