পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে মানুষকে ঠকিয়ে আসছিলেন তিনি

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা–পুলিশের হাতে আটক প্রতারক সোহেল রানা
সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয় দিয়ে মানুষকে ঠকিয়ে আসছিলেন তিনি। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে জামিনে মুক্ত করে দেওয়ার কথা বলে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় আজ সোমবার হাতেনাতে ধরা পড়েছেন পুলিশের এই ভুয়া এসআই।

আটক ওই ব্যক্তির নাম সোহেল রানা (২৮)। তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের মজিবার রহমানের ছেলে বলে দাবি করেছেন। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়–সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে আদালত চত্বরে যাওয়ার সময় সদর থানা-পুলিশের একটি দল সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে আটক করে। আটকের সময় তাঁর কাছ থেকে পুলিশের উপপরিদর্শকের (এসআই) একটি জাল পরিচয়পত্র, বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড, আদালতের জাল নথি, পুলিশ স্টিকারযুক্ত একটি মোটরসাইকেল ও দুটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে জামিনে মুক্ত করে দেওয়ার কথা বলে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় আজ সোমবার হাতেনাতে ধরা পড়েছেন পুলিশের এই ভুয়া এসআই।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি খোকন ও বাশার টানা ১৪ বছর ধরে যশোর কারাগারে বন্দী রয়েছেন। গত শুক্রবার সোহেল রানা দণ্ডিত ব্যক্তিদের বাড়িতে যান এবং নিজেকে আলমডাঙ্গা থানার ‘উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা’ হিসেবে পরিচয় দেয়। এ সময় তিনি বন্দী দুজনের সাজার মেয়াদ কমানো এবং জামিনে মুক্তির ব্যবস্থা করে দেবেন বলে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। এবং অগ্রিম হিসেবে ৩ হাজার টাকা নিয়ে আসেন। চুক্তি অনুযায়ী বাকি সাত হাজার টাকা নিয়ে খোকন-বাশারের বাড়ির লোকজনকে সোমবার চুয়াডাঙ্গা আদালত চত্বরে আসতে বলেন। কথামতো আজ সোমবার তাঁরা টাকা নিয়ে এলে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী সোহেল রানা ‘বেল বন্ড’ দেখান। কিন্তু কাগজ দেখে সন্দেহ হলে খোকন-বাশারের লোকেরা তা সদর থানা-পুলিশকে অবগত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে থানা-পুলিশের একটি দল হাতেনাতে তাঁকে আটক করে থানায় নেয়।

সোহেল রানা গত ২৫ মার্চ থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার কাছাকাছি অবস্থিত হোটেল রয়েল ব্লুতে অবস্থান করে আসছিলেন এবং সেখানে থেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজি করে আসছিলেন।
জসিম উদ্দিন, সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই)

সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন জানান, আটক সোহেল রানা এর আগেও সদর উপজেলার দৌলাতদিয়াড়ের একটি মামলা নিষ্পত্তির কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ৪৭ হাজার টাকা, সোনার আংটি ও ঘড়ি নিয়েছেন। এ ছাড়া জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয়ে আরেকজনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় বাড়ি হলেও সোহেল রানা গত ২৫ মার্চ থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার কাছাকাছি অবস্থিত হোটেল রয়েল ব্লুতে অবস্থান করে আসছিলেন এবং সেখানে থেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজি করে আসছিলেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান সাংবাদিকদের জানান, সোহেল রানাকে আটকের পর থেকে নতুন নতুন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।