পুলিশ দেখে মোটরসাইকেল ফেলে পুকুরে ঝাঁপ আসামির

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন দুজন পুলিশ। এ সময় সেখান দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন মনিরুল ইসলাম (৩৬)। পুলিশ দেখামাত্র তিনি মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে পালাতে থাকেন। খানিকটা দৌড়ে পালানোর পর কোনো পথ না পেয়ে একপর্যায়ে তিনি পুকুরের পানিতে ঝাঁপ দেন। পানি থেকে ওপরে ওঠার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

রোববার বিকেলে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মনিরুল যশোর সদর উপজেলার শেখহাটী গ্রামের জহর মিস্ত্রির ছেলে।

পুলিশ বলছে, মনিরুলের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় দুটি মাদকের মামলাসহ তিনটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি পলাতক ছিলেন।

পুলিশ ও একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিকেলে যশোর সদর থানার তালবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আল ইমরান ও কনস্টেবল তাজিমুল ইসলাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কালেক্টরেট পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিকেল পাঁচটার দিকে পাশের সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন মনিরুল। দুই পুলিশ সদস্যকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে পালাতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি কালেক্টরেট পুকুরে ঝাঁপ দেন। দুই পুলিশ সদস্য তাঁকে আশ্বস্ত করলে তিনি নিজেই পুকুর থেকে ওপরে উঠে আসেন। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ‍তাঁরা ইজিবাইকে করে তাঁকে নিয়ে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহমেদ তারেক শামস বলেন, বিকেল ৫টা ১৭ মিনিটের দিকে পুলিশ মনিরুলকে হাসপাতালে আনে। এ সময় তিনি কিছুটা অচেতন ছিলেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে কয়েকটি পরীক্ষা দেওয়া হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদন পেলে তাঁর অসুস্থতার বিষয়টি জানা যাবে।

মনিরুলের চাচাতো ভাই নাজমুল ইসলাম রোববার রাত সাড়ে আটটায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, একটি মামলায় আত্মসমর্পণ করতে মনিরুল রোববার আদালতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারেননি। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে ফেরার পথে তিনি পুলিশ দেখে কালেক্টরেট পুকুরের পানিতে ঝাঁপ দেন। পানি থেকে ওপরে ওঠার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সম্ভবত তিনি স্ট্রোক করেছেন। তাঁকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা ভালো নয়। তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

তালবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই আল ইমরান বলেন, মনিরুলের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় দুটি মাদকের ও একটি চুরির মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন।